৯ মাস আগে এক সকালে মো. ইরাদত মোল্লা (২৫) বাড়ি থেকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে যান। কিন্তু আর ফিরে আসেননি তিনি। ছেলে নিখোঁজের সাত মাস পর গত ১ এপ্রিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তাঁর বাবা। এদিকে তাঁর খোঁজে দেশের বিভিন্ন মাজার ও শহরে গিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁর মা।
মো. ইরাদত মোল্লা ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সালথা গ্রামের বাসিন্দা মো. মান্নান মোল্লা ও ছালেহা বেগমের ছেলে। মান্নান মোল্লা পেশায় একজন দিনমজুর। আর ছালেহা গৃহিণী। ইরাদত মোল্লার উচ্চতা আনুমানিক পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চি। গায়ের রং ফরসা। মুখে দাঁড়ি আছে। বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় তাঁর গায়ে সবুজ ও কালো রঙের ফুলহাতা চেক শার্ট ও লুঙ্গি ছিল।
পরিবারের লোকজন বলেন, ইরাদতের বাবা মান্নান বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এক যুগ ধরে শয্যাশায়ী। এ অবস্থায় ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালিয়ে সংসারের হাল ধরেন ছেলে ইরাদত। তিন বোনের বিয়েও দিয়েছেন তিনি। বেশ কয়েক বছর আগে ছিনতাইকারীরা ইরাদতকে পিটিয়ে তাঁর ভ্যানটি নিয়ে যায়। নিজের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ভ্যানটি হারিয়ে অনেকটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন ইরাদত। পরে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়ে যান তিনি। এদিকে অসুস্থ স্বামীকে ঘরে রেখে নিখোঁজ সন্তানের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন ছালেহা।
ছালেহা বেগম বলেন, ‘মাঠে আমাগো এক কাঠা জমিও নাই। অনেক বছর ধরে আমার স্বামী বিভিন্ন রোগে বিছানায় পড়ে আছেন। সে কোনো কাজকাম করবার পারে না। আমার তিন মাইয়া ও দুই ছেলে। বড় ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতে আমাদের কোনো খবর রাখে না। ছোট ছেলে ইরাদত ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাত। ভ্যান ছিনতাইয়ের পর সে পাগলের মতো হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত আমার ছেলেডার কোনো খোঁজ পাই নাই। খেয়ে না খেয়ে দেশের বিভিন্ন মাজার ও শহরে গিয়ে তাকে খুঁজতেছি। কোথাও তার দেখা পাই নাই।’
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফায়েজুর রহমান বলেন, ইরাদতের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি ৯ মাস আগের। অথচ থানায় জানানো হয়েছে মাত্র দুই মাস আগে। তাঁর ইরাদতের খোঁজ পাওয়ার জন্য বিভিন্ন থানায় তাঁর ছবিসহ তথ্য পাঠানো হয়েছে।