শেরপুরের শ্রীবরদীতে ধানখেত থেকে মো. জসিম (১২) নামে এক স্কুলছাত্রের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের হাঁসধরা গ্রামের একটি ধানখেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
জসিম উপজেলার হাঁসধরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত গোলাপ মিয়ার ছেলে। সে উপজেলার হাঁসধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এদিকে জসিমের ভাইয়ের ব্যাচারিচালিত ভ্যান চুরির ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মো. মাসুদ (২৩) নামের এক তরুণকে গতকাল রাতে আটক করেছে পুলিশ। মাসুদ উপজেলার বিলভরট গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে। পুলিশ ধারণা করছে, জসিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মাসুদ জড়িত।
পুলিশ ও নিহত শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় ইফতার শেষে জসিম বাজার থেকে পান কেনার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। জসিম তার বড় ভাই রুবেল মিয়ার ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি নিয়ে হাঁসধরা গ্রামের বাজারের উদ্দেশে যাচ্ছিল। তবে এর পর থেকে জসিমের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে গতকাল রাতে জসিমের ভাইয়ের ভ্যানটি নিয়ে মাসুদ বিক্রি করার জন্য শ্রীবরদী পৌর শহরের উত্তর বাজারে নিয়ে যান। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তাঁরা মাসুদকে আটক করে ভ্যানসহ শ্রীবরদী থানা–পুলিশে সোপর্দ করেন।
এদিকে দীর্ঘ সময় পরও জসিম বাজার থেকে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন ও স্বজনেরা গতকাল রাতে বিভিন্ন স্থানে জসিমকে খোঁজাখুঁজি করেন। তবে সারা রাত জসিমের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে আজ সকালে স্থানীয় লোকজন হাঁসধরা গ্রামের একটি ধানখেতে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে শ্রীবরদী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এ সময় উদ্ধার হওয়া লাশটি শিশু জসিমের বলে তার বড় ভাই রুবেল মিয়া শনাক্ত করেন। পরে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীবরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। শিশু জসিমের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে তার গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জসিমের কাছ থেকে ভ্যানটি ছিনিয়ে নেওয়ার পর তাকে হত্যা করে লাশ ধানখেতে ফেলে দেওয়া হয়। আটক মাসুদকে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।