কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ১১টি দানসিন্দুকের টাকা গণনা অব্যাহত আছে। তবে আজ শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টার গণনায় পাওয়া গেছে ছয় কোটি টাকা। বর্তমানে খুচরা টাকা গণনা করা হচ্ছে। গণনা শেষ হতে সন্ধ্যা লেগে যেতে পারে।
দুপুরে পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কিশোরগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল রিয়াজুল করিমের উপস্থিতিতে ১ হাজার ও ৫০০ টাকার নোটের ৬ কোটি টাকার বান্ডিলগুলো বস্তায় ভরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে স্থানীয় রূপালী ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। বাকি টাকা গণনা চলছে। গণনা শেষ হতে সন্ধ্যা লেগে যেতে পারে। এবার দানসিন্দুকের সংখ্যা ও টাকার বস্তা যেহেতু বেশি, তাই আশা করছেন, এবার টাকার পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ৩ মাস ১৩ দিন পর কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ১১টি দানসিন্দুক খুলে পাওয়া গেছে ২৯ বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা। সকাল আটটার দিকে এসব টাকা গণনার কাজ শুরু করা হয়।
জেলা শহরের নরসুন্দা নদীতীরের ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে লোহার দান সিন্দুকগুলো প্রতি তিন থেকে চার মাস পর পর খোলা হয়। আগে ৯টি সিন্দুক থাকলেও এবার আরও দুইটি সিন্দক বাড়ানো হয়েছে। গত ১৭ আগস্ট খোলা হয়েছিল দানসিন্দুকগুলো। তখন ২৮ বস্তার মধ্যে ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়া ছিল বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা।
প্রথমে টাকাগুলো লোহার সিন্দুক থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মসজিদের মেঝেতে ঢেলে গণনার কাজ শুরু করা হয়। প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কিশোরগঞ্জের আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া ও পাগলা মসজিদের এতিমখানার প্রায় আড়াই শ শিক্ষার্থী, ব্যাংকের ৭০ কর্মকর্তা-কর্মচারী, মসজিদ কমিটি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ সাড়ে তিন শ মানুষ টাকা গণনার কাজ করছেন।
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় এবং জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করা হয়।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি স্থাপিত। কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করে থাকেন। মানুষ টাকাপয়সা ছাড়াও স্বর্ণালংকার দান করেন। গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়।