পাঁচ বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই আলোচিত ঘটনার মামলার রায় আজ মঙ্গলবার ঘোষণা করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত করা হয়নি। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার নতুন তারিখ ঘোষণা করেছেন নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর মামলাটির অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে ১৬ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন বিচারক।
আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. সালাহ উদ্দিন রায় ঘোষণার তারিখ পেছানোর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। আজ সকালে তিনি বলেন, এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় মামলা। এ কারণে রায় লেখার কাজে কিছুটা বেশি সময় নিতে হচ্ছে। এখনো কাজ শেষ করা যায়নি। তাই আগের ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী আজ রায় ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। আগামী ধার্য তারিখে রায় ঘোষণা করা হবে।
রায় ঘোষণা উপলক্ষে আজ আদালতে হাজির করা হয়েছিল মামলায় কারাগারে থাকা সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কার হওয়া প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৫ জন আসামিকে। একই সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন সেই রাতের ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারী ও তাঁর স্বামী-স্বজনেরা। ছিলেন বাদী ও বিবাদীপক্ষের আইনজীবীরা।
নতুন তারিখ ঘোষণা হওয়ার পর নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী ও মামলার বাদী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই; আর কিছু না।’
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে সুবর্ণচরে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। চার সন্তানের মা ওই নারীর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কার হওয়া প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি সালেহ আহমদ সোহেল খান প্রথম আলোকে বলেন, আলোচিত ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একজন আসামি—মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮)—ঘটনার পর থেকে পলাতক।