নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী হিসেবে খ্যাত বর্তমান সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল বিজয়ী হতে পারলেন না। ২ হাজার ২৫৩ ভোটের ব্যবধানে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের ইফতিকার উদ্দিন তালুকদারের কাছে হেরে গেছেন।
রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ তাঁর সম্মেলনকক্ষে আসনটির বেসরকারি ফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ইফতিকার উদ্দিন পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৮০৩ ভোট। অসীম কুমার পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫৫০ ভোট।
অসীম কুমার উকিল কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আর ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়ে তিনি প্রথম বিজয়ী হন। এবার মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করলেন।
ভোটার ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা-৩ আসনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের নৌকার প্রার্থী অসীম কুমার ও ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী ইফতিকার উদ্দিন ছাড়া ঈগল প্রতীকের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুর কাদের কোরাইশী পান ৫ হাজার ৪৬০ ভোট, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান খান পান ৩২৭ ভোট।
স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, নির্বাচনী এলাকার জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইফতিকার উদ্দিনের জয় পাওয়া সহজ হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, ‘অসীম উকিল কেন্দ্রীয়ভাবে একজন বড়মাপের নেতা হতে পারেন, তিনি বিদ্বান ব্যক্তি। কিন্তু তৃণমূল মানুষের সঙ্গে তিনি সহজে মিশতেন না। এমপি থাকাকালীন স্থানীয়দের সঙ্গে সীমিত যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি সময় পেলে এলাকায় আসতেন ঠিকই, কিন্তু সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করতেন না। কেন্দুয়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আসাদুল হক ভূঁইয়াসহ কয়েকজন নেতাকে নিয়ে তিনি থাকতেন, যার ফলে অনেক ভোটারই ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে ভোট দেননি।’