মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতাদের বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ। শুক্রবার বিকেলে লৌহজং উপজেলার চন্দ্রেরবাড়ির বাজার সড়কে
মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতাদের বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ। শুক্রবার বিকেলে লৌহজং উপজেলার চন্দ্রেরবাড়ির বাজার সড়কে

শিমুলিয়া ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া নেতাদের বহিষ্কারের দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ফেরিঘাট, মাছঘাট ও ট্রলারঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতা–কর্মীদের বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার চন্দ্রেরবাড়ির বাজার সড়কে কুমারভোগ ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ইউনিয়ন বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী চন্দ্রেরবাড়ি থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশমুখ পর্যন্ত যায়। পুনরায় চন্দ্রেরবাড়ি বাজারে এসে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল থেকে কুমারভোগ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাউসার তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনসহ চাঁদাবাজিতে জড়িত ব্যক্তিদের বহিষ্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। পরে চন্দ্রেরবাড়ি সড়কে বক্তব্য দেন বিক্ষোভকারীরা।

ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ও উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক শাহজাহান ব্যাপারী এতে সভাপতিত্ব করেন। ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় পথসভায় বক্তব্য দেন ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহপ্রচার সম্পাদক সেকান্দার খান, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ইলিয়াস শেখ, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুরু মাদবর, আবুল হোসেন, দেওয়ান আল আমীন, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রিয়াজ আহমেদ প্রমুখ।

ইজারাদার সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শনার্থী এখানে বেড়াতে আসেন। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কাছ থেকে লৌহজং উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মোল্লা প্রায় ১ কোটি ৪২ লাখ টাকায় ঘাটের ইজারা নেন। পাশাপাশি ৮ লাখ টাকায় দুটি ট্রলারঘাট ও ১০ লাখ টাকায় মাছঘাটেরও ইজারা নেন তিনি।

ইজারাদার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা কাউসার তালুকদার এবং সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটি দল ঘাটের সব ব্যবসা দখলে নেন। তাঁরা ১৬ আগস্ট ঘাটের পার্কিং, ট্রলারঘাট, দোকান, রেস্তোরাঁ থেকে টাকা তুলতে শুরু করেন। তাঁরা ঘাট থেকে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা তুলে নিজেদের কাছে রাখছেন।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মো. কামরুজ্জামান রতন বলেন, বিএনপির নাম ব্যবহার করে যাঁরা অন্যায়, দখলবাজি, চাঁদাবাজি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক, এটাই তাঁরা চান। কুমারভোগের কাউসার তালুকদার ও আনোয়ার হোসেনদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।