গাজীপুরে রেললাইনে নাশকতার ঘটনায় কমলাপুর রেলওয়ে থানায় মামলা
গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে নাশকতার ঘটনায় ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে থানায় মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে আশরাফুল আলম খান নামের রেলের এক কর্মকর্তা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলাটি করেন।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের শ্রীপুরের প্রহলাদপুর ইউনিয়নের বনখরিয়া এলাকায় আন্তনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনটি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার কমলাপুরে যাচ্ছিল। মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর ও ভাওয়াল রেলস্টেশনের মাঝামাঝি রেলপথের একটি অংশ কেটে রাখে দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে এক যাত্রী নিহত ও অন্তত ১৪ জন আহত হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ট্রেনের চালক ও দুই সহকারী।
এদিকে ট্রেনের লাইনচ্যুত ইঞ্জিন ও বগি উদ্ধারের জন্য আজ বিকেল চারটা থেকে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেলপথে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। রেলের একটি সূত্র জানায়, বিকেলে ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে আরও দুটি ক্রেন নিয়ে যাওয়া হয়। ক্রেন দুটির সাহায্যে রেলপথের দুই পাশে পড়ে থাকা বগি ও ইঞ্জিন উদ্ধার শুরু হয়। সন্ধ্যা নাগাদ ইঞ্জিন ও দুটি বগি উদ্ধার করা হয়।
শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধারকাজের জন্য জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেলপথে রাত আটটা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হবে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। তবে রাত সাড়ে আটটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
এর আগে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ৬৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (গাজীপুর) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি নাশকতার ঘটনায় অপরাধীদের ধরতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সিভিল প্রশাসনের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স অভিযান চালানোর কথা জানান। এদিন সকাল ১০টায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসী, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনে থাকা রেলের কর্মী ও আশপাশের রেলস্টেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ ছাড়া বেলা তিনটায় ঘটনাস্থলে আসেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা ইয়াসমিন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার পর ১৫ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ মেরামত করা হয়। গতকাল রাতে দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, মহুয়া ও বলাকা এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি সব ট্রেন চলাচল শুরু করে। এরপর আজ সকালে সব ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। বিকেলে আবার উদ্ধারকাজের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়।