শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ ও নড়িয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ত্রুটি দেখা দেওয়ায় দুটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে বিলম্ব হয়েছে। এ কারণে কেন্দ্র দুটির ৯টি কক্ষে প্রথম এক ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। পরে নির্বাচন কার্যালয় থেকে ইভিএম সরবরাহ করা হলে ভোট গ্রহণ স্বাভাবিক হয়।
কেন্দ্র দুটি হলো নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের ২২ নম্বর দুলুখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ভেদরগঞ্জের চরকুমারিয়া ইউনিয়নের ৭৬ নম্বর মোল্লাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র।
জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ ও নড়িয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ইভিএমে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। নড়িয়ায় ৭৬টি ভোটকেন্দ্রে ৬৭০টি ইভিএম এবং ভেদরগঞ্জে ৮০টি কেন্দ্রে ৬৩৯টি ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম পাঠানো হয়। প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা রাতে সেগুলো পরীক্ষা করে দেখেন। ভোট গ্রহণ শুরু হয় আজ সকাল আটটায়।
গতকাল রাতে নড়িয়া উপজেলার দুলুখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে তিনটি ইভিএম যন্ত্রে ত্রুটি দেখা দিলে বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়। পরে একজন মেরামতকারী এসে তা ঠিক করে দেন। সকালে যন্ত্রগুলো দিয়ে ভোট গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হলে পাঁচটি কক্ষের পাঁচটি যন্ত্রেই ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে কক্ষগুলোতে ভোট গ্রহণ শুরু করা যাচ্ছিল না। খবরটি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হলে জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে নতুন পাঁচটি ইভিএম কেন্দ্রটিতে পাঠানো হয়। সকাল নয়টার দিকে ওই ভোটকেন্দ্রের সব কটি কক্ষে ভোট গ্রহণ শুরু করা হয়। দেরিতে ভোট শুরু করার কারণে কেন্দ্রের বাইরে ভোটার ও প্রার্থীর সমর্থকেরা জড়ো হন। তখন উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন।
অন্যদিকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার চর কুমারিয়া ইউনিয়নের মোল্লাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে চারটি কক্ষে ইভিএমে ত্রুটি দেখা দেয়। সেখানেও ভোট গ্রহণ কার্যক্রম এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে। পরে ওই কেন্দ্রে চারটি ইভিএম পাঠানো হলে সকাল নয়টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
সকাল ১০টার দিকে নড়িয়া উপজেলার দুলুখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ভোটারদের উপস্থিতি কম। কেন্দ্রে ৩ হাজার ৬০৬ ভোটার। ১১টি কক্ষে ১১টি ইভিএম যন্ত্র দিয়ে ভোট গ্রহণ চলছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত সেখানে ৩৩৭টি ভোট পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্ট প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচটি ইভিএম যন্ত্র কাজ করছিল না। কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের ভিড় ছিল। নতুন যন্ত্র আনা হলে এক ঘণ্টা পর ভোট গ্রহণ শুরু হয়। প্রথম দিকে বিষয়টি নিয়ে সবাই বিচলিত হয়ে পড়েন।
দুলুখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ইভিএমগুলো ভোটকেন্দ্রে পৌঁছানোর পর গতকাল রাতে তা পরীক্ষা করা হয়। তখন তিনটি যন্ত্রে ত্রুটি দেখা দেয়। মেরামতকারী এসে তা ঠিক করেন। সকালে ওই তিনটিসহ পাঁচটি যন্ত্রে ভোট গ্রহণ হচ্ছিল না। তখন নির্বাচন কার্যালয়ে জানানো হয়। তারা নতুন পাঁচটি যন্ত্র পাঠায়। ঘণ্টাখানেক পর ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুটি উপজেলার দুটি ভোটকেন্দ্রে কয়েকটি ইভিএমে ত্রুটির কারণে কিছু সময় পরে ভোট গ্রহণ শুরু করতে হয়েছে। ওই দুটি কেন্দ্রে আমাদের কাছে মজুত থাকা নতুন ইভিএম পাঠানো হয়। এখন সর্বত্র স্বাভাবিকভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। ইলেকট্রনিক যন্ত্র হওয়ায় ত্রুটি দেখা দিতে পারে। সে জন্য আমরা আরও ইভিএম ব্যাক-আপে রেখেছি। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে ব্যবস্থা নিতে পারি, সে প্রস্তুতি আমাদের আছে।’