রংপুরে রাতভর ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এই পয়েন্টে আজ শনিবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। তবে আজ রাতের মধ্যে পানি আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আজ সকালে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে রংপুরে ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, পানি বাড়ার আশঙ্কায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় নদীতীরবর্তী তিনটি উপজেলার নদীপাড়ের মানুষ সতর্কাবস্থায় আছেন। গতকাল রাতে রংপুরে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। আজ সকাল থেকে আকাশে কালো মেঘ। সেই সঙ্গে থেমে থেমে মেঘের গর্জনও রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থানে এসেছে।
এদিকে ঈদের আগে প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার কারণে তিস্তা নদীতীরবর্তী রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার লোকজনের মধ্যে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আজ সকালে রংপুরের কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া উপজেলার নদীপাড়ের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দুই দিন থেকে রাতে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। দিনের মধ্যে নদীর পানি না বাড়লেও রাতে পানি বেড়েছে।
গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল্লাহেল হাদী বলেন, তিন দিন থেকে নদীর পানি বাড়া-কমা করছে। মাঝেমধ্যে আকাশে ঘন মেঘ জমে যাচ্ছে। আকাশের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে নদীর পানি বাড়বে। এমন অবস্থায় নদীপাড়ের মানুষদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
তিস্তা নদীর তীরবর্তী কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, উত্তর চিলাখাল, সাউথপাড়া, মটুকপুর, গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, মহিষাসুর, রমাকান্ত, আলালচর, জয়দেব এলাকা এবং নোহালী ও আলমবিদিতর এই দুই ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা থেকেই যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন।
কাউনিয়ার নদীতীরবর্তী এলাকা বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার আলী বলেন, উজান থেকে পানি আসা শুরু হলেও সেই পানি খুব দ্রুত এই এলাকায় চলে আসে। এ ছাড়া দুই দিনের রাতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। নদীপাড়ের লোকজনদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।