মেহেরপুর-১ আসন

‘৭ তারিখ শুধু ভোট হবে নৌকার, নৌকার আর নৌকার’

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাবলু বিশ্বাস গত সোমবার এক সভায় বক্তব্য দেন
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাবলু বিশ্বাস বলেছেন, ‘৭ তারিখ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শুধু ভোট হবে নৌকার, নৌকার আর নৌকার। যতক্ষণ পর্যন্ত ওই বাউন্ডারির (ভোটকেন্দ্রের) ভেতরে ঢোকে। যখন দেখব আমাদের লোকজনের সব শেষ হয়ে গেছে, ভালো। আর শেষ না হলে কুড়ি নি গিয়ে ওই বাউন্ডারির ঢুকাইয়া দোবো, ঢুকায় দিয়ে ভোট পুল করে নেব।’

গত সোমবার রাত নয়টায় বাবলু বিশ্বাস পিরোজপুর ইউনিয়নের একটি জনসভায় এ বক্তব্য দেন। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। বাবলু মেহেরপুর-১ আসনের নৌকার প্রার্থী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

বক্তব্য দেওয়ার সময় বাবলু বিশ্বাস তাঁর ইউনিয়নের চারটি ভোটকেন্দ্রে ট্রাকের এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়ারও হুমকি দেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘পিরোজপুর ইউনিয়নের চারটি সেন্টারে আমি যেন দেখতে না পাই কোনো এজেন্ট আছে ওই চাপা দেওয়া জিনিসের (ট্রাক প্রতীকের)।’

একই অনুষ্ঠানের আরেকটি ভিডিওতে বাবলু বিশ্বাসকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘কীসের ভয় দেখায়, আমি তো বুজতি পারিনি। আমার চেয়ে মস্তান বেশি আছে কেউ? আমার চেয়ে যন্ত্রপাতি কারও বেশি আছে? আমার চেয়ে কি টাকা তাদের বেশি আছে? তাহলে ভয় কিসের দেখায়? যারা আমার কাছে কাজ করি খাইত কদিন আগে, তারা ভয় দেখায় কিসের? জমি তিন বিঘি কেইড়ি নেব। কেইড়ি নিলি পারে ভয় দেখানো বুইঝি যাবে। সেই কাজটি কইরবই এইবার।’

এসব বক্তব্যের বিষয়ে বাবলু বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহীন বলেন, আওয়ামী লীগ এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছে, তাতে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ বিরাজ করছে। সে হিসেবে অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট না পাওয়ার কথা। সেই আবেগ থেকে এমন বক্তব্য দিয়েছেন তিনি (বাবলু বিশ্বাস)। তবে বক্তব্যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্ট না থাকতে দেওয়ার কথা বলা হয়নি।

ওই আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, এভাবে জনসভায় যদি প্রার্থীদের এজেন্ট প্রবেশ করতে না দেওয়ার বক্তব্য দেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ ভোটারদের মনে শঙ্কা তৈরি হবে। ভোট দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ পাবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশেষ করে নৌকার নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে এভাবে বক্তব্য দেওয়ার কারণে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে না যায়।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফরহাদ হোসেন ও স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক আবদুল মান্নান ছাড়া আরও চারজন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা হলেন জাতীয় পার্টির আবদুল হামিদ (লাঙ্গল), এনপিপির তরিকুল ইসলাম (আম), সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের বাবলু জোম (ছড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন (ঈগল)।