সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় একই স্থানে ও একই সময় যুবলীগের একাংশ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশ পৃথক কর্মসূচি আহ্বান করায় উপজেলার বাদশাগঞ্জ বাজারে ও এর আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাদশাগঞ্জ বাজার ও ধর্মপাশা বাজারে মাইকিং করে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাল শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার বাদশাগঞ্জ বাজারে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এদিকে এই স্থানে একই সময় উপজেলা যুবলীগের একাংশের উদ্যোগে যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুব সমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভার আহ্বান করা হয়। আবার ওই দিন বিকেল চারটার দিকে বাদশাগঞ্জ বাজারেই উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনেরও আয়োজন করা হয়। এ অবস্থায় সংঘর্ষ এড়াতে এবং জানমালের নিরাপত্তার কথা ভেবে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বাদশাগঞ্জ বাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, সপ্তাহখানেক ধরে উপজেলার সেলবরষ ও পাইকুরাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন নিয়ে প্রচারণা চলছিল। এর মধ্যে হঠাৎ উপজেলা যুবলীগের একাংশের উদ্যোগে প্রস্তুতি সভার আহ্বান করা হয়।
জানতে চাইলে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যুবলীগের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া যুব সমাবেশকে সফল করার জন্য কাল বাদশাগঞ্জ বাজারে প্রস্তুতি সভা ডাকা হয়েছিল। আমরা কারও কর্মসূচিতে বাধা দিতে নয়, পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী এই প্রস্তুতি সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমরা আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছি। সভার পরবর্তী তারিখ পরে জানানো হবে।’
পাইকুরাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘নানাবিধ কারণে এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ দুই ভাগে বিভক্ত। আমাদের সম্মেলনকে পণ্ড করার উদ্দেশ্যেই অপর পক্ষ এই কর্মসূচি দিয়েছে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়, তাই আইনের প্রতি সম্মান ও আস্থা রেখে ১৪৪ ধারা মেনে নিয়ে আমরা সেখানে সম্মেলন করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সেলবরষ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশের আহ্বায়ক নূরুল হুদা ওরফে মুকুলও একই কথা বলেন।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, দুই পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে কোনো লাভ হয়নি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লিখিতভাবে জানানো হলে তিনি ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নেন। উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
ইউএনও মুনতাসির হাসান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ একই সময়ে ও একই স্থানে পৃথক কর্মসূচি আহ্বান করায় সংঘর্ষ এড়াতে ও জানমালের নিরাপত্তার কথা ভেবে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন উপজেলার বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে ওই দিন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও বিবেচনায় আনা হয়েছে।