টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়কে ভেঙে যাওয়া বেইলি সেতুর মেরামত চলছে, দুর্ভোগ 

টাঙ্গাইল থেকে দেলদুয়ার যেতে অনেকে নৌকা করে পারাপার হচ্ছেন। আবার অনেকে ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন।

টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়কের ভেঙে যাওয়া সেহড়াতৈল দুল্যা বেইলি সেতুর মেরামতকাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় ওই স্থান পার হতে হচ্ছে

টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়কের উন্নয়ন হয়েছে কয়েক দফা। সড়কটি প্রশস্ত করা হয়েছে। তাই এ সড়কে বেড়েছে যানবাহন চলাচল। কিন্তু সেহড়াতৈল দুল্যা বেইলি সেতুটির জায়গায় নির্মাণ করা হয়নি কংক্রিটের সেতু। ভাঙাচোরা সেতুটি গত শুক্রবার রাতে চতুর্থবারের মতো ভেঙে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চলাচলকারী ব্যক্তিদের।

এ অবস্থায় টাঙ্গাইল থেকে দেলদুয়ার যেতে অনেকে নৌকা করে পারাপার হচ্ছেন। আবার অনেকে ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন। গতকাল রোববার সকালে শ্রমিকেরা ভাঙা পাটাতন সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করেছেন। তবে ট্রাকটি এখনো তোলা হয়নি।

দেলদুয়ার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মারুফ বলেন, এই বেইলি সেতুর কারণে দেলদুয়ারের মানুষকে প্রায়ই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এখানে একটি স্থায়ী কংক্রিটের সেতু নির্মাণের জন্য সড়ক বিভাগের কাছে বিভিন্ন সময় দাবি জানানো হয়েছে। জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায়ও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কংক্রিটের সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছে বিভিন্ন সময়। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলিউল হোসেন জানান, এই বেইলি সেতুর জায়গায় একটি আরসিসি সেতু করার জন্য প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।

সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, টাঙ্গাইল থেকে দেলদুয়ারের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। গত তিন দশকে এই সড়কের কয়েক দফা উন্নয়ন হয়েছে। সর্বশেষ দুই বছর আগে ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এর পর থেকে এই সড়কে যানবাহন চলাচল বেড়ে গেছে। টাঙ্গাইল অঞ্চল থেকে মানিকগঞ্জগামী বাস, ট্রাক চলাচল করছে। এ ছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট হলে বিকল্প সড়ক হিসেবে দেলদুয়ার হয়ে যানবাহন চলাচল করে। ফলে সড়কটিতে ভারী যানবাহন চলাচল আগের থেকে অনেক বেশি বেড়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, সেহড়াতৈল দুল্যা এলাকার ওই ডোবার ওপর আগে কাঠের সেতু ছিল। ১৯৮৮ সালের বন্যায় কাঠের সেতু ভেসে যায়। পরে ১৯৮৯ সালে এখানে বেইলি সেতু স্থাপন করা হয়। এই সেতুতে বিভিন্ন সময় পাটাতনে যানবাহনের চাকা আটকে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে সারবাহী ট্রাকসহ সেতুটি ধসে পরে। এরপর আরও দুবার সেতু ভেঙে যায়। 

গত শুক্রবার রাতে বালুবাহী ট্রাকসহ সেতুটি ধসে চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, শুক্রবার রাত একটার দিকে টাঙ্গাইল থেকে দেলদুয়ারের দিকে ওই ট্রাক যাচ্ছিল। বেইলি সেতু অতিক্রম করার সময় সেটি ট্রাক নিয়ে ভেঙে পড়ে। 

সেতুর ওই স্থানে ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। অনেকে মোটরসাইকেল নিয়ে নৌকা করে পারাপার হচ্ছেন। 

দেলদুয়ার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয়ের প্রশিক্ষক মীর শরিফুল ইসলাম জানান, সেতু ভেঙে যাওয়ায় টাঙ্গাইল থেকে করটিয়া মটড়া হয়ে দেলদুয়ারে গিয়ে অফিস করতে হয়েছে। 

সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল মোমেন জানান, ভেঙে যাওয়া বেইলি সেতুর মেরামতের কাজ চলছে। মেরামতকাজ শেষ করে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

ওই ট্রাকটির মালিকের কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। 

দেলদুয়ার থানার ওসি নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, ট্রাকটির মালিকানার দাবি নিয়ে কেউ আসেনি। খোঁজ করেও মালিকের সন্ধান মেলেনি।