সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ফেসবুকে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে আটকের পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আজ বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হক। তিনি বলেন, দোয়ারাবাজার থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে উপপরিদর্শক (এসআই) আরাফাত ইবনে সফিউল্লাহ বাদী হয়ে আজ মামলাটি করেন।
পুলিশের ভাষ্য, ওই কিশোর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ফেসবুকে আরেকজনের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পবিত্র কোরআন অবমাননা করেছে অভিযোগ করে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা রাতে মিছিল করে। ঘটনা জেনে পুলিশ আগেই কিশোরকে তাদের হেফাজতে নেয়। মিছিল থেকে উত্তেজিত জনতা ওই কিশোরের বাড়িসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২০-২৫টি বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা চালায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ওই কিশোরের স্বজনেরা বলেন, ওই কিশোরের বাবা দীর্ঘদিন ধরে ওমানপ্রবাসী। বাড়িতে ওই কিশোর, তার মা ও বড় ভাই থাকে। বড় ভাই স্নাতক প্রথম বর্ষে এবং ওই কিশোর দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। ওই গ্রামে ৮০-৯০টি পরিবারের বাস। দুটি পরিবার ছাড়া সবাই সংখ্যালঘু। গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘দোষ করছে একজন। তার বিচার হোক। আমরা গরিব মানুষের সবতা ভাঙলো কেনে?’
গ্রাম ঘুরে অনেকের বাড়িঘরে তালা দেখা গেছে। নৈনগাঁও মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আবদুর করিম হোসাইন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আর যাতে কোনো রকম বিশৃঙ্খলার চেষ্টা না হয়, সেটি সবাইকে বোঝাচ্ছেন তাঁরা।
ঘটনার পর গতকাল রাতেই সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস মিয়া, পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান ওই গ্রামে গিয়েছিলেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন, আর কোনো সমস্যা হবে না। দোয়ারাবাজার থানার ওসি মো. জাহিদুল হক বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। গ্রামে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আছেন।