পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় একটি বাড়ির ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকা অবস্থায় এক গৃহবধূ ও তাঁর দুই ছেলের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁদের তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের সাতখামার-কুরুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে।
নিহত তিনজন হলেন সাতখামার-কুরুলিয়া এলাকার ব্যবসায়ী সেলিম শেখের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (৩৫), দুই ছেলে সৈকত (১২) ও সায়হাম (৯)।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্যবসায়ী সেলিম শেখ পঞ্চগড়ের বোদা বাজারে একটি কাপড়ের দোকান চালান। গতকাল রাত ১১টার পর তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়িতে ফিরে বাড়ির বাইরের দরজা খোলা দেখতে পান। পরে তিনি বাড়ির ভেতরে গিয়ে ঘরের মেঝেতে তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে পুলিশ ও স্থানীয় সেনাক্যাম্পের সেনাসদস্যদের খবর দেন। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে সিআইডির সদস্যরাও ঘটনাস্থলে যান।
দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশ ও সিআইডির সদস্যরা স্থানীয় লোকজন ও বাড়ির মালিক সেলিম শেখের সঙ্গে কথা বলে আলামত সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া পুলিশ লাশ তিনটির প্রাথমিক সুরতহাল শেষে আজ ভোরে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নিহত গৃহবধূ তাসলিমা আক্তারের মামা আবুল বাশার বলেন, ‘ঘরের সব দরজাসহ বাড়ির বাইরের মূল দরজাও খোলা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অপর একটি কক্ষে রাখা কাপড়চোপড়সহ অন্যান্য জিনিস এলোমেলো পড়ে ছিল। কী কারণে এ ঘটনা, এখনো বোঝা যাচ্ছে না।’
আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা মা ও দুই ছেলেকে কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
সেনাবাহিনীর বোদা সেনাক্যাম্পের মেজর সিয়াম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ একজনকে আটক করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যেকোনো ধরনের কাজে সেনাবাহিনী স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে সহায়তা করবে।