যৌন হয়রানির অভিযোগে দুই শিক্ষক বরখাস্তের বিষয়ে যা বললেন উপাচার্য

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
ফাইল ছবি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহাকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে। যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়ার পরও সাজন সাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে রেজুয়ান আহমেদ আজ প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার হয়নি। যে যৌন হয়রানির ঘটনার ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, সে যৌন হয়রানির বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আমার কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। শুধু মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে কি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে?’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম আজ প্রথম আলোকে বলেন, আগামী মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের সঙ্গেও আজ কথা বলেছে প্রথম আলো। উপাচার্য সৌমিত্র শেখর মুঠোফোনে বলেন, যৌন হয়রানির এবং যৌন হয়রানির অভিযোগ করার পরও ব্যবস্থা না নেওয়ার ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়। একটি কমিটির তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেট সভায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপর একটি কমিটির তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। ওই কমিটির তদন্ত শেষ হওয়ার পর রেজুয়ান আহমেদের ক্ষেত্রে দুটি ঘটনা ঘটতে পারে। এক হচ্ছে তদন্ত কমিটি যদি তাঁর বিরুদ্ধে কিছু না পায়, তাহলে তাঁর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ উঠে যেতে পারে। আবার এমনও হতে পারে, যদি তাঁর বিরুদ্ধে এর চেয়ে বড় কোনো অভিযোগ পায় তদন্ত কমিটি, তাহলে তিনি স্থায়ী বরখাস্তও হতে পারেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও যৌন হয়রানির ঘটনায় গঠিত একটি তদন্ত কমিটির সদস্য এ কে এম আব্দুর রফিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী কমিটির তদন্তে সাজন সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ শতভাগ প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ অভিযোগ পাওয়ার পরও এ ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন। দুজনের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট সভা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের আরও একটি তদন্ত চলছে। সেটির বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’

৩ মার্চ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক ছাত্রী একই বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহার বিরুদ্ধে ফেসবুকে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। ৫ মার্চ ওই শিক্ষার্থী উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন সাজন সাহার বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগে বলা হয়, বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদের কাছে অভিযোগ করা হলেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেননি। এমন অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গতকাল বৃহস্পতিবার দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা।