বগুড়ায় পাঠক, লেখক ও দর্শনার্থীদের পদচারণে জমে উঠেছে অমর একুশে বইমেলা। বগুড়া শহরের শহীদ খোকন পার্কের শহীদ মিনার চত্বরে গত মঙ্গলবার থেকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বগুড়ার উদ্যোগে শুরু হয়েছে এই মেলা। ১০ দিনের এই মেলার দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকাল থেকেই মেলার স্টলগুলো উপচে পড়ে পাঠক-দর্শনার্থীতে।
মেলায় তরুণ-তরুণীরা দল বেঁধে ঘুরেছেন, সেলফি ও ছবি তুলেছেন। বই কিনেছেন কম। অন্যদিকে মা-বাবার সঙ্গে মেলায় ঘুরতে আসা শিশু-কিশোরেরা প্রিয় লেখকদের বই কিনেছে, কেউ কেউ লেখক ও কবিদের অটোগ্রাফ সংগ্রহ করেছে।
গতকাল বিকেলে মেলা ঘুরে দেখা যায়, রকমারি বইয়ের সম্ভার দিয়ে সাজানো হয়েছে মেলার ৪০টি স্টল। এসব স্টলে শোভা পাচ্ছে নতুন-পুরোনো হরেক রকমের বই। পাশাপাশি স্থানীয় লেখকদের নতুন বইও এসেছে মেলায়। মেলা মঞ্চে কয়েকটি নতুন বইয়ের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠান হয়েছে।
মেলায় এক লাখের বেশি বই দিয়ে সাজানো হয়েছে নিউজ কর্নার পাবলিকেশন। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী কালীপদ দাস প্রথম আলোকে বলেন, বিক্রির শীর্ষে থাকা বইগুলোর মধ্যে আছে আনিসুল হকের ‘কখনো আমার মাকে’, মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘ওগো টুনটুনি কীগো ছোটাচ্চু’, সুমন্ত আসলামের ‘অর্ধেক তুমি অর্ধেক বনলতা সেন’, মহিউদ্দিন আহমদের ‘১৯৭১ অবরুদ্ধ বাংলাদেশের শেষ দিনগুলি’ ইত্যাদি।
মেলায় অনলাইন বুকস শপের স্টলে ভিড় দেখা যায় খুদে পাঠকদের। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী শাহাদত হোসেন বলেন, মেলায় ছোটদের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে।
মেলার প্রধান ফটকের পাশেই ইশা প্রকাশনের স্টলে দেখা গেল একদল তরুণ-তরুণী। সরকারি আজিজুল হক কলেজের এই শিক্ষার্থীরা বই হাতে নিয়ে সেলফি আর ছবি তোলায় ব্যস্ত। বই না কিনে সেলফি তোলার কারণ জানতে চাইলে এক তরুণী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেলায় আজ ঘুরতে এসেছি। আজ বন্ধুদের সঙ্গে সেলফি-ছবি তুলছি, মেলা তো শেষ হয়নি, আরেক দিন বই কিনব। এই স্টলে কথা হয় কবি ও লেখক অনন্য রফিকের সঙ্গে। এবার তাঁর নতুন বই ‘দহন অপেক্ষা’। তিনি বলেন, ‘পাঠক যে আমার বই পড়ছেন আগ্রহ নিয়ে, তাতেই আমি সার্থক।’
মেলায় বই কিনতে আসা পুন্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জিনিয়া সুপ্তি মেলা চত্বরে চটপটি, ফুচকা ও খেলনার দোকানপাটের দাপটে বিরক্তি প্রকাশ করলেন। বই মেলার ভেতরে অন্য পণ্যের দোকান না থাকলেই ভালো হতো বলে তাঁর মত।