‘আমাকে নিয়েন না ভাই, আমার ছেলে-মা অসুস্থ’

বাঘারপাড়ার যুবদল নেতা মিফতাহ উদ্দীন শিকদারকে সাদা পোশাকে পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

‘আমাকে নিয়েন না ভাই। আমার ছেলে অসুস্থ, আমার মা অসুস্থ।’ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিফতাহ উদ্দীন শিকদারকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তারের সময় এভাবে পুলিশকে অনুনয়-বিনয় করেন তিনি। বিএনপির পক্ষ থেকে গ্রেপ্তারের এই ভিডিওচিত্র আজ শুক্রবার সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হয়।

বিএনপি নেতারা বলছেন, মিফতাহ দীর্ঘদিন যাবৎ ঘরছাড়া ছিলেন। অসুস্থ মা ও শিশু সন্তানকে দেখতে কিছু সময়ের জন্য তিনি বাড়ি গিয়েছিলেন। সেই সুযোগেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মিফতাহ উদ্দীনকে খালি গায়ে সাদা পোশাকে পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তখন মিফতাহ উদ্দীন পুলিশকে বলছেন, ‘আমাকে নিয়েন না ভাই। আমার ছেলে অসুস্থ, আমার মা অসুস্থ। আমাকে একটু পোশাক পরার সুযোগ দেন।’ মিফতাহের মাসহ পরিবারের স্বজনেরা গাড়িটি ঘিরে ধরেন। এ সময় মায়ের উদ্দেশে মিসতাহ উদ্দীন বলেন, ‘মা, তুমি টেনশন করো না। আমি আবার ফিরে আসব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহদাৎ হোসেন বলেন, মিফতাহ উদ্দীন পলাতক ছিলেন। নাশকতা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিএনপি নেতারা জানান, মিফতাহর পাশাপাশি গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির ছয় নেতাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার অপর নেতারা হলেন, সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান, পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ও ওয়ার্ড যুবদলের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন এবং কেশবপুর সদর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান।

এ ছাড়া মনিরামপুরের গোপালপুর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. হাসানের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভাঙচুর ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম বলেন, আজ রাজপথে বিএনপির কোনো কর্মসূচি না থাকলেও নেতা-কর্মীদের পুলিশি অভিযান থেমে নেই। বিএনপির চলমান এক দফার আন্দোলনে পুলিশের দমনপীড়নের অংশ হিসেবে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমনটা হতে পারে না।