সিলেটে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা শনিবার সন্ধ্যায় তফসিল বাতিলের দাবি এবং রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের সমর্থনে মশালমিছিল করেছেন। পরে নেতা-কর্মীরা বন্দরবাজার করিমউল্লা মার্কেটের সামনে পৌঁছালে সেখানে মশাল সড়কের ওপর ফেলে আগুন জ্বালিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকার রংমহল টাওয়ারের সামনে থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মশালমিছিলটি বের করেন। এ সময় সিলেট নগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনসহ অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। নেতা-কর্মীরা মিছিলে তফসিল বাতিল ও রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান। মশালমিছিলটি রংমহল টাওয়ার থেকে বন্দরবাজার মোড়ের দিকে করিম উল্লাহ মার্কেটের সামনে পৌঁছানোর পর সড়কের ওপর মশাল ফেলে বিক্ষোভ করতে থাকেন তাঁরা। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ দেখে নেতা-কর্মীরা এদিক-ওদিক পালিয়ে যান। পরে সড়কে ফেলে রাখা মশাল নিভিয়ে দেয় পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, পুলিশের গুলির শব্দ পেয়ে বন্দরবাজার এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পথচারীরা ছোটাছুটি করতে থাকেন।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে বলে শুনেছেন। তবে তাঁকে থানায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত নেওয়া হয়নি।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরবাজার এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়েছে তবে কয় রাউন্ড ছোড়া হয়েছে তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
এর আগে গত বুধবার সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় মশালমিছিল বের করেছিলেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সেদিনও পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করেছিল। এ ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
সিলেটের বিশ্বনাথসহ বিভিন্ন উপজেলায় ‘অবৈধ তফসিল’ বাতিলের দাবি ও হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে ও অবৈধ তফসিল বাতিলের দাবিতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাঠে রয়েছেন। বিএনপি জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে রাজপথে লড়াই করে যাচ্ছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে।