গঙ্গাচড়ায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা প্রার্থী, জমে উঠেছে প্রচারণা

রংপুর জেলার মানচিত্র
রংপুর জেলার মানচিত্র

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। ইতিমধ্যে উপজেলায় নির্বাচনের প্রচারণা জমে উঠেছে।

দলীয় প্রার্থী বাছাই নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা বিপাকে পড়েছেন। এই দুই দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী দুজন ও বিএনপির দুজন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় কর্মী–সমর্থকেরা দ্বিধান্বিত। তবে জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থী হওয়ায় দলীয়ভাবে তারা কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন মোট সাতজন। বাকি দুজনের দলীয় পদ নেই।

উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের দুজন প্রার্থী হওয়ায় নেতা-কর্মীরা যেমন বিভক্ত হয়ে পড়েছেন, তেমনি বিএনপিরও একই অবস্থা। তবে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী কিছুটা ভালো অবস্থানে আছেন। যদিও জাতীয় পার্টির অবস্থাও এখন আগের মতো নেই। তিন দলের প্রার্থী থাকায় ভোটের মাঠ গরম।

নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন গঙ্গাচড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন (কাপ-পিরিচ) এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম (মোটরসাইকেল)। বিএনপির দুই নেতা হলেন উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মোকাররম হোসেন (ঘোড়া) এবং উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান প্রামাণিক (আনারস)। জাতীয় পার্টির নেতা মোস্তাফিজার রহমান এবং স্বতন্ত্র অন্য দুই প্রার্থী কামেল শেরাফী মাহবুব (চিংড়ি মাছ) ও সাইদুজ্জামান (হেলিকপ্টার)।

উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন নেতা-কর্মীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আমার পক্ষেই কাজ করছেন। এখানে কোনো দলীয় বিভেদ কিংবা দলের ভোট ভাগাভাগি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এবারও আমি নির্বাচিত হব ইনশা আল্লাহ।’

২৯ মে অনুষ্ঠেয় তৃতীয় দফার এই নির্বাচন ঘিরে উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিলেও প্রচারণা কিংবা গণসংযোগে প্রকাশ্যে কেউ মাঠে নামছে না। সাধারণ ভোটারদের নিয়ে বিএনপির দুই প্রার্থী মাঠে সরব আছেন।

উপজেলা বিএনপির শীর্ষ একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ভেতরে-ভেতরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভোটের কাজে অংশ নিলেও দলীয় নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এরপরও বিএনপির দুই প্রার্থীই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থেকে একজন বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলায় গত জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থী তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে হেরেছিলেন। মাঠপর্যায়ে দলের অবস্থা তেমন ভালো না হলেও এবার সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। উপজেলা নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘আমি আশা করছি, জনগণ জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষেই থাকবে।’

রংপুর জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মোতাহসিম বলেন, তৃতীয় দফায় ২৯ মে এই উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ সুন্দর রয়েছে। কারও কোনো অভিযোগ নেই।