জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারাজানা ইসলাম বলেছেন, ‘ইতিহাস অন্য রকম, আমি এখন সেই ইতিহাস লিখছি। যদি বেঁচে থাকি আমার জীবদ্দশায় সেটি পাবলিশ হবে না। লিখে বস্তাবন্দী করে এমন জায়গায় রাখব যে কেউ পাবে না। আমার জীবদ্দশায় প্রকাশ হলে এরা আমাকে তো মারবেই, আমার ছেলেকেও মারবে।’
গতকাল বুধবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন। উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নানা ঘটনার নেপথ্যের কারণ সম্পর্কে তিনি কথাগুলো বলেন।
বর্তমান উপাচার্যের দিকে ইঙ্গিত করে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘কারেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কীভাবে এসেছিল? প্রোভিসি কীভাবে হয়েছিলেন তিনি। তারপর ভিসি হওয়ার সময় আমি কী তাঁর জন্য সুপারিশ করিনি?’
উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি তো এবার ধরব, কেন গত ৯ মাসে একটাও আন্দোলন হয় নাই এত ঘটনা ঘটার পরও। আমার যেদিন অভিষেক হয়, নির্বাচন করে এসেছিলাম ২০১৪ সালে। সেই আমার অভিষেক অনুষ্ঠানের দিন গুলি ফুটানো হলো? সেই সময় আমার কী দোষ ছিল? আমি কি এতই খারাপ ছিলাম?’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের দুই কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘যে টাকা ছাড় হয়নি, সেটা আমি কীভাবে খরচ করে ফেললাম? এটা বলা ঠিক নয়। এটা যদি আমার সময়ে কেউ করে থাকেন, কাউকে খুশি করতে এর দায়দায়িত্ব আমি নেব না।’
আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তন প্রসঙ্গে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘সমাবর্তন প্রতিবছর হওয়া উচিত। আমি আগেও এটা বলেছি। কিন্তু আমার সময় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ ছিল। কেউ আমাকে প্রটেক্ট করেনি। এত আন্দোলন তখন কেন হয়েছে? আমি কি এতই খারাপ ছিলাম? এখন একবেলাও আন্দোলন হয় না। এইটা যদি বের করতে পারো, তোমাদের সাংবাদিক জীবন সার্থক হবে।’
২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোট পান অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। একই বছরের ২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির আদেশে দেশের প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আচার্যের নির্বাহী আদেশে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি আবার উপাচার্য হন। গত বছরের ২ মার্চ তাঁর মেয়াদ শেষ হয়।