রাজশাহীর তানোরে বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণের সময় হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মিজানুর রহমানসহ হামলাকারীদের দল থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে লিফলেট বিতরণকারী বিএনপি নেতারা এ দাবি জানান।
রাজশাহী নগরের অলকার মোড়ের একটি রেস্তোরাঁয় রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সুলতানুল ইসলামের (তারেক) অনুসারীরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। গত রোববার বিকেলে তানোরে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণের সময় সুলতানুল ইসলামের ওপর হামলা হয়। এর প্রতিবাদে আজ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
অভিযুক্ত মিজানুর রহমান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র। মিজানুর রহমান রাজশাহী-১ আসনে বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিনের অনুসারী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তানোরের বাধাইড় ইউনিয়ন বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হুমায়ুন কবির। এ সময় উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব শামসুল আলম, উপজেলা তাঁতী দলের নেতা বদর উদ্দিন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফিজুর রহমান, গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম, চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ৩১ দফার বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছাতে দেশজুড়ে কর্মসূচি চলমান। এর ধারাবাহিকতায় তানোর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট বিতরণের জন্য সুলতানুল ইসলাম নেতা-কর্মীদের নিয়ে তানোরে যান। তখন মিজানুর রহমানের নির্দেশনায় তাঁর ভগ্নিপতি তানোর পৌর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেনসহ ৮ থেকে ১০ জন হামলা করে লিফলেট বিতরণে বাধা দেন। এ সময় চারটি মাইক্রোবাসের সামনের কাচ ভাঙচুর করা হয়। হামলায় সুলতানুল ইসলামসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
হুমায়ুন কবির বলেন, হামলাকারীরা ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে শান্ত হননি; বরং সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের নির্দেশে লিফলেট বিতরণে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের তালিকা করে রাস্তায় একা পেলে মারধর করছেন। গতকাল সোমবার সকালে আজিজুর রহমান নামের একজনকে ও বিকেলে ফয়সাল মণ্ডল নামের আরেকজনকে মারধর করা হয়েছে। তিনি বলেন, হামলাকারী কৃষক লীগ নেতা হাবিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করেছেন। তিনি মিজানুর রহমানের ভগ্নিপতি। গত ৫ আগস্টের পর মিজানুর এলাকায় সরকারি পুকুর, গভীর নলকূপ দখলসহ নানা অপকর্ম করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হামলার ঘটনায় পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাঁরা এখন জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দেবেন। তাঁরা মিজানুর রহমানসহ হামলাকারী অন্যদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে বিএনপির নেতা মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হামলার দিন তিনি ঢাকায় ছিলেন। কারা হামলা করেছেন, তিনি জানেনই না। রাজনৈতিক কারণে তাঁকে জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি দাবি করেন, তাঁর ভগ্নিপতি হাবিবুর কোনো দিন কৃষক লীগ করেননি। তিনি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তিনিও হামলায় অংশ নেননি।