কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘাতে হতাহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আজিজুল ইসলাম। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত আলোচনার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার কে এম আজিজ নামে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে এ আহ্বান জানান সংসদ সদস্য। ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনের কষ্ট দূর করতে এই মুহূর্তে করণীয় কী?’ শিরোনামে দীর্ঘ পোস্ট দেন তিনি। আজিজুল ইসলাম কেশবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারকে পরাজিত করে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ফেসবুক পোস্টে সংসদ সদস্য আজিজুল ইসলাম লেখেন, ‘যেভাবে চলছে, তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লেগে যাওয়ার কথা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার কোনো সলিউশন হতে পারে না। আমি মনে করি, যেসব শিক্ষার্থীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নাই, তাঁদের গ্রেপ্তার করাটা অযৌক্তিক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চাইলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধরপাকড় করাটা মোটেও সুখকর হবে না। এই মুহূর্তে সরকারের উচিত যেসব সাধারণ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁদের নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসি, শিক্ষামন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, অভিভাবক, আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক ও জাতীয় অধ্যাপকদের নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিস্থিতি ফেরাতে একটা সর্বজনীন ডায়ালগের ব্যবস্থা করা।’
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, ‘শিক্ষার্থীদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রশমিত করতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখানোই হবে সময়ের সেরা সিদ্ধান্ত। একটা পক্ষ তো চাচ্ছেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাঁধে বন্দুক রেখে সরকার পতন করতে। দুষ্কৃতকারীদের সেই সুযোগও নষ্ট হবে এ রকম কিছু করলে। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় যে দুজন লোকের ওপর শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ, সেই ওবায়দুল কাদের সাহেব এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এখনো শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে দেখলাম না। অবশ্যই শিক্ষার্থীদের কাছে তাঁদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ পোস্টে দেশের মঙ্গলে রাষ্ট্রকেই শিক্ষার্থীদের মনের ক্ষোভ প্রশমনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মত দেন।
জানতে চাইলে সংসদ সদস্য আজিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের মৃত্যু তাঁকে ব্যথিত করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রীর কথায় যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই দায়ভার তাঁদের। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কাছে তাঁদের দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাওয়া উচিত। সব শিক্ষার্থীকে জামায়াত-শিবির বানিয়ে দেওয়া ঠিক না বলেও তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি কথাগুলো বলবেন।