জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের জালগাঁও গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই সংঘর্ষ ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন জালগাঁও গ্রামের আবদুস সাত্তার (৫৫) ও খোরশেদ আলম (৩২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জালগাঁও গ্রামের গোলাম মোস্তফার সঙ্গে একই গ্রামের জয়নাল আবেদীন, খোরশেদ আলম, মোর্শেদুল আলম ও জহিরুল আলমের ২০ বছর ধরে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে কুমিল্লার আদালতে একাধিক মামলা চলমান আছে। আজ সকালে বিরোধপূর্ণ একটি জমিতে ট্রাক্টর লাগিয়ে ধান রোপণ করতে যান মোস্তফার ভগ্নিপতি একই গ্রামের আবদুস সাত্তার। এই সময় সাত্তারের সঙ্গে বহিরাগত লোকজন ছিলেন। ওই খবর পেয়ে খোরশেদ আলমের চার ভাই সেখানে গিয়ে বাধা দেন। এই সময়ে সাত্তার ও খোরশেদের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দুই পক্ষের লোকজন পরস্পরকে কুপিয়ে জখম করে। এতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলেই মারা যান আবদুস সাত্তার। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান প্রতিপক্ষের খোরশেদ আলম। আহত হন জয়নাল, মোর্শেদ ও জহিরুলসহ অন্তত ১০ জন।
২০ বছর ধরে মোস্তফা ও খোরশেদ আলম পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে মামলা চলছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে জালগাঁও এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যদিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমার জমিতে আমার বোনজামাই ট্রাক্টর নিয়ে চাষ করছিলেন। খোরশেদের লোকজন এসে হামলা করে কুপিয়ে তাঁকে মেরে ফেলেন।’
অন্যদিকে মোর্শেদুল আলম বলেন, ‘আমাদের জমিতে মামলা থাকা অবস্থায় চাষাবাদ শুরু করে মোস্তফার বোনজামাই। তখন বাধা দিতে গেলে খুনের ঘটনা ঘটে। আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’
ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন, জমি নিয়ে বিরোধ থেকে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের দুজন মারা গেছেন। এই জমি নিয়ে মামলা বহু বছর ধরে চলছে।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন বলেন, ২০ বছর ধরে মোস্তফা ও খোরশেদ আলম পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে মামলা চলছে। বিরোধপূর্ণ জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে এই খুনোখুনি হয়। এ নিয়ে কোনো মামলা হয়নি। লাশ দাফনের পর মামলা হবে।