আচরণবিধি লঙ্ঘন

সশরীরে শোকজের জবাব দিলেন নিক্সন চৌধুরী, জানালেন ভবিষ্যতে সতর্ক থাকবেন

সশরীরে হাজির হয়ে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেন ফরিদপুর–৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন। শুক্রবার বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে
ছবি: প্রথম আলো

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে সশরীরে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছেন ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন। আজ শুক্রবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গঠন করা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে শোকজের জবার দেন তিনি।

ফরিদপুর জজ আদালতের পুরোনো লাল রঙের ভবনের দক্ষিণ পাশে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত অবস্থিত। আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন চৌধুরীকে ফরিদপুর-৪ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আদালতের পেশকার মো. শওকত বলেন, নিক্সন চৌধুরী শোকজের লিখিত জবাব দিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে বিচারবিশ্লেষণ করে অনুসন্ধান কমিটি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বেলা ৩টা ৫ মিনিটে নিক্সন চৌধুরী ওই বিচারকের কার্যালয়ে আসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহদাৎ হোসেন, সদরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নিক্সন যখন আদালত প্রাঙ্গণে আসেন, তখন তাঁর সঙ্গে ২০ থেকে ২৫ জন কর্মী ছিলেন। তাঁদের কাউকে আদালত ভবনের ওপরের তলায় দেয়নি পুলিশ।

বিকেল চারটায় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে নিক্সন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে লিখিতভাবে আমার বক্তব্য দিয়েছি। পাশাপাশি বলেছি, আর যেন আচরণবিধি লঙ্ঘন না হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখব।’ তিনি বলেন, ‘আসলে আমাদের লোক অনেক বেড়ে গেছে। আমরা তো জনপ্রতিনিধি। আমরা তো কাউকে দাওয়াত দিয়ে আনিনি। আমরা নমিনেশন পেপার জমা দেব, কোথা থেকে কী পরিমাণ লোক এসেছে, আমার জানা নেই। আমরা তো কেউ এলে তাঁকে আটকে রাখতে পারি না। তবে এ কাজ আমি ইচ্ছা করে করিনি।’

বিশাল গাড়িবহর নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান ফরিদপুর–৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন। গত বুধবার শহরের হাসিবুল হাসান লাবলু সড়কে

নিক্সন চৌধুরী আরও বলেন, ‘২৯ ও ৩০ নভেম্বর সারা দেশে নমিনেশন পেপার জমা দেওয়া নিয়ে মিছিল-মিটিং হয়েছে। দেশের এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে মিছিল-মিটিং হয় নাই। আর শোকজ আমি খাইলাম, সাকিব আল হাসান খাইল।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রচারণা মিডিয়ায় বেশি হাইলাইট হওয়ায় আমরা শোকজ খেয়েছি। আমার মনে হয় এই শোকজ আমাদের সবার জন্য ভালো হয়েছে। সবাই সাবধান হয়ে আচরণবিধি যাতে লঙ্ঘন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আমাদের সবার আইন মেনে নির্বাচন করা উচিত।’

এর আগে গতকাল বার্তাবাহকের মাধ্যমে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি নিক্সন চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠায়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, নিক্সন চৌধুরীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে প্রথম আলোসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন দেখে অনুসন্ধান কমিটির কাছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি প্রতীয়মান হয়েছে। এ ঘটনায় আজ (শুক্রবার) বেলা সাড়ে তিনটার মধ্যে সশরীর অনুসন্ধান কমিটির কাছে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

নির্বাচনী এলাকার তিন উপজেলায় গাড়িবহরে মহড়া দিয়ে গত বুধবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন নিক্সন চৌধুরী। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে আড়াই শতাধিক মাইক্রোবাস ও দুই শতাধিক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন তিনি। এ সময় ওই এলাকার বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।