যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফ উদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছেন মাদ্রাসাছাত্র আশরাফুল ইসলাম। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলামের দেওয়া এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে নিহত সাইফ উদ্দিনের পরিবার।
নিহত সাইফ উদ্দিনের বাবা আবুল বাশার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর ছেলে সাইফ দুশ্চরিত্র ছিলেন না। অত্যন্ত ভদ্র ও সবার কাছে ভালো হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। সানমুন হোটেলের কক্ষে চেতনানাশক কিছু খাইয়ে অজ্ঞান করে ছুরিকাঘাত করে সাইফকে হত্যা করা হয়েছে।
আবুল বাশার আরও বলেন, ‘একজন আশরাফুলের একার পক্ষে একজন শক্তিশালী যুবককে (সাইফ) হত্যা করা মোটেও সম্ভব না। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’
এর আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত মাদ্রাসাছাত্র আশরাফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফ করেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। পুলিশ সুপার বলেন, আটকের পর আশরাফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে আশরাফুল সানমুন হোটেলের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষে সাইফ উদ্দিনকে হত্যা করে পালিয়ে যান। হোটেলের সিসিটিভির ফুটেজে মাস্ক ও পাঞ্জাবি পরিহিত যে তরুণকে সাইফ উদ্দিনের কক্ষ থেকে বেরিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে, তিনিই আশরাফুল।
এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হোটেল সানমুনের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফ উদ্দিনের হাত বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বিকেলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নিহত সাইফ উদ্দিনের বাড়ি শহরের ঘোনাপাড়ায়। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফ উদ্দিন কক্সবাজার শহর আওয়ামী লীগের দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
নিহত সাইফের ছোট ভাই মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিকল্পিত একটি হত্যাকাণ্ডকে বিকৃতভাবে (যৌন নির্যাতন) উপস্থাপন করে আমাদের পরিবার ও আওয়ামী লীগকে মানুষের সামনে হেয় করা হয়েছে। আশরাফুলের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার সঙ্গে আমরা দ্বিমত পোষণ করছি এবং এসপির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান চাই। আমার ভাইয়ের চরিত্র হরণের প্রতিবাদে কাল বুধবার বেলা তিনটায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের পরিবারের বক্তব্য তুলে ধরা হবে।’