পাবনা-৩ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র দখল, ভোট কারচুপি, জাল ভোট প্রদানসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল হামিদ। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচনী এলাকার ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুরের প্রতিটি কেন্দ্র ও চাটমোহর উপজেলার ছয়টি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে করে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল হামিদ এ দাবি জানান। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ১৫৯টি। আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে আবদুল হামিদ বলেন, নির্বাচনে পাবনা-৩ আসনে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার ভোটকেন্দ্র থেকে নৌকার প্রার্থীর ছেলে ও তাঁদের সমর্থকেরা তাঁর (আবদুল হামিদের) এজেন্টদের বের করে দিয়ে জাল ভোট দিয়েছেন, ভোট কেটে নিয়েছেন। ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সহযোগিতায় এসব অনিয়ম হয়েছে। তাঁর পোলিং এজেন্টরা এসব অভিযোগের সত্যতা জানিয়েছেন।
আবদুল হামিদ আরও বলেন, অনেক কেন্দ্রে ব্যালট পেপার নিয়ে নৌকার লোকজন জোর করে সিল মেরেছেন। অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের তুলনায় ভোট বেশি কাটা হয়েছে। ফলাফল পর্যালোচনা করে এর প্রমাণ মিলেছে। ব্যালট পেপারের মুড়ি বই অংশ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেখানে ভোটারদের কোনো নম্বর বা স্বাক্ষর নেই।
আবদুল হামিদের দাবি, অনেক ভোটকেন্দ্রে বাইরে থেকে নৌকার সমর্থকেরা ট্রাক প্রতীক–সমর্থিত ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়েছেন। অনেককেই ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া বিজয়ী হওয়ার পর নৌকার লোকজন তাঁর নেতা-কর্মীদের মারধর করেছেন। দেড় শতাধিক বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, এবারের নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এবং উৎসবমুখর ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশন যে নির্দেশনা দিয়েছিল, সেটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে ভোটের ফলাফল নিয়ে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। পরাজয় নিশ্চিত জেনে ফল নিজের পক্ষে নিতে নৌকার প্রার্থী ও তাঁর ছেলে নির্বাচনে নানা অনিয়ম ও ভোট জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে পাবনা-৩ আসনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মনে করেন আবদুল হামিদ।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মু. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। ভোটের দিন প্রার্থীরা যখন যা অভিযোগ করেছেন, দ্রুতই সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন এসে এমন অভিযোগ যুক্তিযুক্ত নয় বলে মনে করি।’