ঠাকুরগাঁওয়ে পরিত্যক্ত বিমানবন্দর চালু ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ বুধবার সকালে শহরের চৌরাস্তায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে জেলার সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মানববন্ধনে অংশ নিতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শহরের চৌরাস্তায় জড়ো হতে শুরু করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পরে বেলা ১১টার দিকে আয়োজক কমিটির ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক সত্য প্রসাদ ঘোষের সভাপতিত্বে মানববন্ধন শুরু হয়।
এতে বক্তব্য দেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুণাংশু দত্ত, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, তেল গ্যাস ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির ঠাকুরগাঁওয়ের সদস্যসচিব মাহবুব হোসেন, দৈনিক করতোয়ার প্রতিনিধি মনসুর আলী, দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি তানভির হাসান, সাংস্কৃতিক কর্মী মাসুদ আহম্মেদ , ঠাকুরগাঁও জার্নালিস্ট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রবিউল এহ্সান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে ঠাকুরগাঁওয়ে সাড়ে ৫০০ একর জমিতে বিমানবন্দরটি নির্মাণ করা হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও-ঢাকা রুটে নিয়মিত উড়োজাহাজ চলাচল করত। কিন্তু ১৯৭৯ সালে লোকসানের অজুহাতে বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় মানুষের দাবির মুখে ১৯৯৪ সালে বিমানবন্দরটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই সময় এক কোটি টাকা ব্যয়ে রানওয়ে মেরামত, টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, বিদ্যুতায়নের কাজসহ বিভিন্ন সংস্কারকাজ করা হয়। এয়ার বেঙ্গল, বোরাকসহ ছয়টি বেসরকারি সংস্থা ঢাকা-ঠাকুরগাঁও রুটে স্টল বিমান সার্ভিস চালু করার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি করে। কিন্তু ওই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। এ কারণে বিমানবন্দরটি বর্তমানে অব্যবহৃত অবস্থায় আছে।
বিমানবন্দরটি চালু হলে ঢাকা-ঠাকুরগাঁও-বাগডোগড়া-ভুটানের থিম্পু ও নেপালের কাঠমান্ডুর মধ্যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিমানসেবা চালুর সুযোগ সৃষ্টি হবে। এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও দৃশ্যপট পরিবর্তন ঘটবে, যা দেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নেবে বলে দাবি বক্তাদের।
বক্তাদের দাবি, বিমানবন্দরটি চালু হলে ঢাকা-ঠাকুরগাঁও-বাগডোগড়া-ভুটানের থিম্পু ও নেপালের কাঠমান্ডুর মধ্যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিমানসেবা চালুর সুযোগ সৃষ্টি হবে। এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও দৃশ্যপট পরিবর্তন ঘটবে, যা দেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নেবে।
এ দাবির পাশাপাশি ঠাকুরগাঁওয়ে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবি তোলা হয়।
বক্তারা বলেন, প্রতিটি জেলায় একটি করে পাবলিক মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে সরকারের। ইতিমধ্যে কয়েকটি জেলায় নতুন করে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু ঠাকুরগাঁওবাসী এ পদক্ষেপ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ঠাকুরগাঁওয়ের জেনারেল হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার হলেও সেখানে জনবলসংকট আর রোগীর চাপে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। জটিল রোগীদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় দিনাজপুর কিংবা রংপুর মেডিকেল কলেজে। আর এসব জায়গায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাড়তি খরচ ছাড়াও নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।