হামাগুড়ি দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে তিনতলায় উঠে ভোট দিলেন মরিয়ম

খুলনা নগরীর বানিয়াখামার মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন মরিয়ম বেগম
ছবি: উত্তম মণ্ডল

জন্মের ছয় মাস পর অজানা রোগে অচল হয়ে যায় মরিয়ম বেগমের দুই পা। এরপর মায়ের কাঁধে চড়ে বড় হয়েছেন। ৪৫ বছর বয়সী মরিয়মকে এখনো দেখভাল করছেন তাঁর মা আকলিমা বেগম। সেই মা মরিয়মকে নিয়ে এলেন ভোটকেন্দ্রে। নিচতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত হামাগুড়ি দিয়ে উঠে ভোট দিলেন মরিয়ম।

খুলনা নগরীর বানিয়াখামার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ নিয়ে পাঁচবার ভোট দিয়েছেন মরিয়ম। এর মধ্যে দুবার ইভিএমে ভোট দিলেন। এর আগে ব্যালটে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতাও আছে মরিয়মের।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভোট দেওয়ার পর মরিয়ম বললেন, ইভিএমে ভোট দেওয়া সহজ। তিনি নিজে হাঁটাচলা করতে পারেন না। তাই রিকশা করে বাসা থেকে ভোটকেন্দ্র এসেছেন। একজন কাউন্সিলর প্রার্থী রিকশা পাঠিয়ে তাঁকে বাসা থেকে কেন্দ্রে এনেছেন।

ভোটকক্ষে মরিয়ম বেগম। এ নিয়ে পাঁচ বার ভোট দিলেন তিনি

কেন্দ্রটি খুলনা সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে। বানিয়াখামার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নারী ভোটার দুই হাজার একজন। সকাল আটটায় ভোট শুরুর পর সাড়ে নয়টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টায় কেন্দ্রটিতে ভোট দিয়েছেন ১০৭ জন। ভোটের হার ৫ দশমিক ৩৪।

ভোট দেওয়ার পর কথা হয় মরিয়ম ও তাঁর মা আকলিমা বেগমের সঙ্গে। আকলিমা বলেন, জন্মের ছয় মাস পর হঠাৎ তাঁর মেয়ের দুই পা অচল হয়ে যায়। অনেক হাসপাতালে ঘুরেছেন। টাকার অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারেননি। তিনি এখন মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

ভোট দিয়ে ফিরে যাচ্ছেন মরিয়ম বেগম

সরেজমিন দেখা যায়, হাতের ওপর ভর করে তিনতলায় উঠে ভোট দিচ্ছেন মরিয়ম। ভোট প্রদানের পুরো কাজটি তিনি নিজে করতে পেরেছেন। আগে অভিজ্ঞতা থাকায় ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানালেন তিনি।

মরিয়মের মা আকলিমা প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রে ভোটারদের চাপ নেই। এবারের মতো কম ভোটার এর আগে দেখেননি।

এবার খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৩৬ ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিটি করপোরেশনের মধ্যে মোট ভোটার রয়েছেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। মোট ২৮৯টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৭৩২টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।