হাসপাতালে বাবার মৃত্যু সংবাদ শুনে লাশ আনতে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেলের চাপায় মারা গেছেন সোলায়মান সরদার (২৮) নামের এক তরুণ। আজ সোমবার দুপুরে শরীয়তপুর-নড়িয়া সড়কের নরবালাখানা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বেলা একটার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই তরুণের বাবা সোহরাব সরদারের মৃত্যু হয়। তাঁদের বাড়ি নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের চান্দনি এলাকায়। বাবার লাশ হাসপাতাল থেকে বাড়ি আনার জন্য তিনি শরীয়তপুর সদরে যাচ্ছিলেন।
নড়িয়া থানার পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের চান্দনি গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব সরদার বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। স্বজনেরা তাঁকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বেলা একটার দিকে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামের বাড়ি চান্দনি থেকে ছেলে সোলায়মান সরদার সদর হাসপাতালের দিকে রওনা দেন। শরীয়তপুর-নড়িয়া সড়কের নরবালাখানা এলাকায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। বেলা পৌনে দুইটার দিকে দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেল তাঁকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সোলায়মান প্রাণ হারান। স্থানীয় লোকজন তাঁর লাশ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিয়ে ওই মোটরসাইকেলের চালক সৌরভ দেবনাথকে শরীয়তপুর সদরের শাবনুর মার্কেট এলাকা থেকে আটক করেন। পরে তাঁকে নড়িয়া থানার পুলিশ হেফাজতে নেয়।
দুর্ঘটনায় নিহত সোলায়মানের আত্মীয় ফরহাদ শেখ প্রথম আলোকে বলেন, সোলায়মান সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী ছিলেন। তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, এমন খবর পেয়ে সম্প্রতি তিনি দেশে আসেন। দুপুরে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে বিচলিত হয়ে তিনি সদর হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। হাসপাতালে যাওয়ার জন্য সড়কে গাড়ির অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তিনি বলেন, ‘আমরা সোলায়মানের বাবার লাশ বাড়িতে নিয়ে এসেছি। আর সোলায়মানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্ত শেষ হলে দুজনের জানাজা একসঙ্গে হবে। এরপর দুজনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে এক ব্যক্তিকে মেরে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মোটরসাইকেলের চালক সৌরভকে আটক করেছে পালং মডেল থানার পুলিশ। পরে তাঁকে নড়িয়া থানায় আনা হয়েছে। তাঁর বাড়ি নড়িয়ার মশুরা গ্রামে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।