‘বগুড়ার সোনাতলা: ঠিকাদারদের লাইসেন্স আটকে রেখে ৯ কোটি টাকার কাজ ভাগাভাগির অভিযোগ’ শিরোনামে ১১ নভেম্বর প্রথম আলোর অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সোনাতলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম আহসানুল তৈয়ব (জাকির)।
আজ বৃহস্পতিবার পাঠানো প্রতিবাদপত্রে আহসানুল তৈয়ব সংবাদটিতে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে বলেন, ‘সংবাদে আহসান হাবীব রতনকে আমার স্বজন পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনায় রতন শিডিউলই (দরপত্র) কেনেনি। সোনাতলা পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রাজ্জাকুল ইসলামও কোনো শিডিউল কেনেনি। সংবাদে কাজ ভাগাভাগির তালিকায় মোমিনুল ইসলামের নাম উল্লেখ রয়েছে। তাকে আমার স্বজন উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আমার ভাইয়ের নাম আহসানুল মোমেনিন সোহেল। তিনি শিডিউল কিনে ড্রপ (জমা) করেছিলেন। কিন্তু কোনো কাজ পায়নি।’
দরপত্র ক্রয় বা দাখিলে ঠিকাদারদের বাধা দেওয়া বা কোনো লাইসেন্স বই আটকানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি দাবি করে আহসানুল তৈয়ব আরও বলেন, দরপত্র সম্পর্কিত ঘটনায় তিনি কিংবা তাঁর স্বজনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বিএনপিদলীয় কোনো নেতা-কর্মী, ঠিকাদার, প্রকৌশলী কিংবা প্রশাসনের কারও সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে কোনো যোগাযোগও করেননি। ঠিকাদারি কাজ পাওয়ার বিষয়ে দলীয় প্রভাব বিস্তারের প্রশ্নই ওঠে না। আহসানুল তৈয়ব অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও আওয়ামী দোসরদের কাছে শুনে যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
সাধারণ ঠিকাদার, ঠিকাদারির সঙ্গে জড়িত সোনাতলা উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের একাংশের নেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পৌরসভার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। প্রতিবাদে আহসানুল তৈয়ব কাজ ভাগাভাগির ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করলেও পৌরসভার নিবন্ধিত ৪৬ জন ঠিকাদারের মধ্যে ৭ জন মাত্র ঠিকাদার অংশগ্রহণ করেছেন। কৌশলে লাইসেন্স আটকে রাখার কারণে বাকিরা অংশ নিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদারেরা। লাইসেন্স বই আটকে রাখার বিষয়ে একজন ঠিকাদারের অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছিলেন সোনাতলা পৌরসভার প্রশাসক ও ইউএনও স্বীকৃতি প্রামাণিকও।
প্রতিবাদপত্রে আহসানুল তৈয়ব তাঁর বা স্বজনদের দরপত্র সম্পর্কিত ঘটনায় কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করলেও তাঁর বড় ভাই ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি এ কে এম আহসানুল হাবিব সরাসরি দরপত্রে অংশ নিয়েছেন। তাঁর চাচাতো ভাই জুলফিকার হায়দারও দরপত্রে অংশ নেন। দরপত্রে অংশ নেওয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম আহসানুল তৈয়বের আস্থাভাজন বলে নিশ্চিত করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রাজ্জাকুল ইসলাম ও আহসান হাবিব সরাসরি দরপত্রে অংশ না নিলেও অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে অংশ নেন বলে ‘বঞ্চিত’ ঠিকাদারেরা অভিযোগ করেছেন। আহসান হাবিব প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, তাঁর মা ও আহসানুল তৈয়ব মামাতো-ফুফাতো ভাইবোন।