জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার লাশ দাফন করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে কুমিল্লায় বাবার কবরের পাশে অবন্তিকাকে দাফন করা হয়।
এর আগে দুপুরে ফ্রিজার ভ্যানে করে অবন্তিকার লাশ কুমিল্লা নগরের দমকল পুকুরের উত্তর পাড়ে বাসার সামনে আনা হয়। এ সময় লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। তিনি বলেন, ‘ওর আত্মহত্যার পেছনে যাঁরা জড়িত, তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।’
বেলা তিনটায় কুমিল্লা সরকারি কলেজ মাঠে অবন্তিকার প্রথম জানাজা হয়। পরে কুমিল্লা শহরতলির শাসনগাছা মহাজন বাড়ি এলাকার গ্রামের বাড়িতে বাবার কবরের পাশে অবন্তিকাকে দাফন করা হয়। অবন্তিকার বাবা মো. জামাল উদ্দিন ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল রোজার সময় মারা যান। তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
এদিকে অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কুমিল্লায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় নগরের কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে কুমিল্লার সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জোটের উদ্যোগে ওই কর্মসূচি হয়। এতে ‘জাস্টিস ফর অবন্তিকা’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন কুমিল্লার বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কুমিল্লা শহরে বাড়িতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী অবন্তিকা। অবন্তিকার কয়েকজন বন্ধু জানিয়েছেন, তিনি ফেসবুক পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহপাঠীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের নিপীড়নের অভিযোগ করেন। ওই পোস্টে একজন সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে ছেলেটির পক্ষ নিয়ে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগও করেছেন তিনি। সেখানেই আত্মহত্যার কথা বলেন অবন্তিকা।
আজকের প্রতিবাদ সমাবেশে অবন্তিকার ওই সহপাঠী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সহকারী প্রক্টরকে গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানানো হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী আজাদ সরকার লিটন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা অবন্তিকাকে আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। অবন্তিকা সাহসী মেয়ে ছিল। ওরে যাঁরা মানসিকভাবে অসুস্থ করে আত্মহত্যায় ধাবিত করেছেন, তাঁদের গ্রেপ্তার চাই। অবিলম্বে আম্মান ও দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে হবে।’