পঞ্চগড় সদর উপজেলায় নিখোঁজের পরদিন শাহিদা আক্তার (১৯) নামের এক কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার ভোরে উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের বামনপাড়া এলাকায় ওই ছাত্রীর বাড়ির পাশের পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে পুলিশ ওই কলেজছাত্রীর লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
নিহত শাহিদা আক্তার বামনপাড়া এলাকার কৃষক হারুন অর রশিদের মেয়ে। তিনি পঞ্চগড়ের হাজী ছফির উদ্দিন আহাম্মদ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই কলেজছাত্রীর মা, বাবা, বড় বোন ও ভগ্নিপতিকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে বিষয়টি হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করছে পুলিশে। এ ঘটনায় নিহত কলেজছাত্রীর পরিবারের লোকজন ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলছে তারা।
নিহত কলেজছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে হাফিজাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মাহাতাব প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার পর থেকে শাহিদা আক্তারকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। সারা দিন বিভিন্ন এলাকায় স্বজনদের বাড়িতে খোঁজখবর নিয়েও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে ওই দিন রাতেই পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ওই কলেজছাত্রীর বাবা। আজ ভোরে ফজরের নামাজ শেষে গোয়ালঘর থেকে গরু বের করছিলেন মেয়েটির বাবা হারুন আর রশিদ। এ সময় বাড়ির উত্তর পাশের পুকুরে উপুড় হয়ে ভাসতে দেখেন শাহিদাকে। পরে তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে তাঁদের সহায়তায় মেয়ের লাশ পুকুর থেকে তুলে বাড়িতে আনেন হারুন। পরে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে ওই বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশ।
ইউপি সদস্য মো. মাহাতাব প্রধান জানান, লাশটি উদ্ধারের সময় মেয়েটির নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। লাশ নিয়ে যাওয়ার পর মেয়েটি মা, বাবা, বড় বোন ও দুলাভাইকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ওই কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধারের পর প্রাথমিক সুরতহালে তাঁর ঘাড়ের পেছন দিকে ফোলার চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহত কলেজছাত্রীর পরিবারের লোকজন ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হবে এবং পরবর্তীকালে তদন্ত অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।