জয়পুরহাটে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্বাস উদ্দীন এ রায় দিয়েছেন। ঘটনার ১৬ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হলো।
রায় ঘোষণার সময় সাজা পাওয়া আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ওই আসামির নাম মো. জুয়েল (৪৭)। তিনি ক্ষেতলাল উপজেলার রসুলপুর দাহাড়পুকুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অন্য দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তাঁরা হলেন—লিলি বিবি (৬০) ও তাঁর স্বামী আবদুল জলিল (৬৭)। তাঁরা জুয়েলের মা-বাবা।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে ক্ষেতলাল উপজেলার রসুলপুর দাহার পুকুর গুচ্ছ গ্রামের জুয়েলের সঙ্গে লাইলী খাতুনের (২০) বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে লাইলী খাতুনের ওপর নির্যাতন করতেন। নির্যাতন সইতে না পেরে লাইলী খাতুন তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান। এ নিয়ে গ্রাম্য সালিস বসে। সালিস বৈঠকে তাঁরা আর লাইলী খাতুনকে নির্যাতন করবেন না বলে অঙ্গীকার করেন। এরপর লাইলী খাতুন স্বামীর বাড়িতে ফিরে ঘর-সংসার শুরু করেন।
২০০৭ সালের ২৩ জুলাই রাতে জুয়েল তাঁর বাড়িতে লাইলী খাতুনকে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ সময় লাইলী খাতুন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরদিন ২৪ জুলাই সকালে লাইলীর স্বজনেরা খবর পেয়ে ছুটে আসেন। লাইলীর বড় বোন রাবেয়া খাতুন বাদী হয়ে ক্ষেতলাল থানায় তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্ষেতলাল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আতিয়ার রহমান মামলাটি তদন্ত শেষে ২০০৭ সালে ৩১ অক্টোবর তিনজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ঘটনার প্রায় ১৬ বছর পর আজ এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, হত্যাকাণ্ডে জুয়েলের মা-বাবার সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় আদালত তাঁদের খালাস দিয়েছেন।
জয়পুরহাট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আবদুল লতিফ খান বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।