রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত এক কাউন্সিলর প্রার্থী বিজয়ী প্রার্থীর দুই সমর্থকের বাড়িতে হামলা এবং সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ওয়ার্ড কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিজয়ী প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর ও বিএনপির সাবেক নেতা।
বিজয়ী প্রার্থীর নাম আবদুস সোবহান ওরফে লিটন। সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তিনি। তিনি শাহ মখদুম থানা বিএনপির সাবেক সহসম্পাদক। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভোটে অংশ নেওয়ায় সম্প্রতি তাঁকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে পরশ। তিনি নগরের বোয়ালিয়া থানা (পশ্চিম) আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে এ তাণ্ডব চালানো হয়।
সোবহান বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে ২ হাজার ২৫৮ ভোট পেয়ে আবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজুর রহমান ঠেলাগাড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৩৮ ভোট।
আবদুস সোবহান বলেন, কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল দেখে মোস্তাফিজুর দুই ঘণ্টা ফলাফল আটকে রাখেন। তিনি ফল পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। না পেরে কেন্দ্র থেকে ফেরার পথে মোস্তাফিজুর তাঁর কর্মীদের নিয়ে প্রথমে উজ্জ্বল নামের তাঁর এক সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালান। ওই বাড়িতে হামলার পর নগরের দড়িখড়বোনা মোড়ে সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর দড়িখড়বোনা এলাকায় এনামুল হক নামের আরেক সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
ঘটনার পর দড়িখড়বোনা এলাকায় সিটি করপোরেশনের এই ওয়ার্ড কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দায় একটি ভাঙা প্লাস্টিকের চেয়ার পড়ে আছে। কার্যালয়ের কাঠের দরজা ভাঙা। ঘরের ভেতরে চেয়ার, টেবিল ও কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এর ভেতর থেকে পোড়ার গন্ধ বের হচ্ছে। কার্যালয়টির সাইনবোর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সোবহান বলেন, ‘এটা সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ওয়ার্ড কার্যালয়। স্থায়ী কার্যালয় আরেকটি আছে। এলাকার মানুষের সুবিধায় ২০১০ সালে কার্যালয়টি করা হয়েছে। এর ভাড়াও দেয় সিটি করপোরেশন। সরকারি অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ব্যাপারে তিনি মামলা করবেন। নিরাপত্তার অভাবে রাতে থানায় যেতে পারিনি। এমনকি বিজয়ের পরে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে একটা বিজয় মিছিলও বের করতে পারেননি।’
পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁর ফোনের সংযোগ পাওয়া যায়নি। এ জন্য তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ না করলে কী হবে জানতে চাইলে ওসি বলেন, পুলিশ তদন্ত করে যা পাবে সে মোতাবেক পরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।