রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে সহকর্মীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি পুলিশ কনস্টেবল কাওসার আহমেদের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায়। কাওসার উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দাড়েরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়াত আলীর ছেলে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হায়াত আলী ছেলের ঘটনার বিষয়ে আজ রোববার বেলা তিনটা পর্যন্ত কিছুই জানেন না।
বেলা সোয়া তিনটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোর প্রতিবেদকের সঙ্গে প্রায় ১৬ মিনিট কথা হয় কাওসারের স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিনের। স্বামীর বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন তিনি।
নিলুফার ভাষ্য, তাঁর স্বামীর ঘটনার বিষয়ে গতকাল শনিবার রাত তিনটার দিকে জানতে পারেন। ঢাকা থেকে আমজাদ হোসেন নামে পুলিশের এক কর্মকর্তা মুঠোফোনে বিষয়টি তাঁকে জানান। এ ঘটনা জানার পর তিনি তাঁর শ্বশুর হায়াত আলীকে জানাননি। তাঁর শ্বশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তাঁর বয়স ৮০ বছর। ছেলের এ ঘটনা জানলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন, এ জন্য তাঁকে জানানো হয়নি। তবে শাশুড়ি মাবিয়া খাতুনকে জানিয়েছেন নিলুফা।
কাওসারের দুই সন্তান আছে। ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন। ২০০৬ সালের মাঝামাঝি তিনি বিয়ে করেন। সংসারে কোনো ঝামেলা বা কলহ নেই বলে জানালেন স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, শনিবার রাত আটটার দিকে সর্বশেষ কাওসার তাঁর মা–বাবার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল বিকেলের দিকে। সে সময় কাওসার বলেছিলেন, ঈদের ছুটি নেওয়ার জন্য ৪ তারিখ আবেদন করেছেন। এবার ঈদে বাড়িতে আসবেন।
নিলুফা বললেন, ‘কাওসারের মানসিক সমস্যা ছিল। রাঙামাটির বরকলে চাকরি করার সময় তিনি মানসিক সমস্যায় ভোগেন। এরপর বিভিন্ন সময় সরকারিভাবেই তাঁকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে অন্তত তিনবার চিকিৎসা করানো হয়েছিল। নিয়মিত ওষুধও সেবন করতেন। কাওসারের কাছে প্রেসক্রিপশনও আছে।’
তবে কাওসার গুলি করে সহকর্মীকে হত্যা করতে পারেন, তা বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁর স্ত্রী। নিলুফা বলেন, ‘আমার এখনো বিশ্বস হচ্ছে না যে গুলি করার মতো কোনো ঘটনা তিনি ঘটাতে পারেন। কীভাবে কী হয়েছে, সেটা বুঝতেছি না।’
কথার একপর্যায়ে নিলুফা জানালেন, কিছুদিন ধরে কাওসার খুবই কম কথা বলতেন। ঈদের কেনাকাটার জন্য বাড়িতে টাকাও পাঠিয়েছিলেন। সংসারে কোনো অভাব–অনটন ছিল না। তবে চাকরি নিয়ে খুবই টেনশন করেন তিনি। ছয় ঘণ্টার ডিউটি আট ঘণ্টা হতো। এ ছাড়া নানা বিষয় নিয়ে তিনি (কাওসার) টেনশন করতেন। এ ছাড়া তেমন কিছু জানা নেই।