নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আসামি নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়।
আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৪ সালের ১৫ মে দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় নূর হোসেনের স্টোররুমের নিচতলা থেকে একটি রিভলবার এবং আটটি গুলি ও আটটি কার্তুজ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই ঘটনার পরের দিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি ধারায় মামলা হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে ওই বছরই প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত আসামি নূর হোসেনকে দুটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্র মামলার রায়ে নূর হোসেনকে দুটি ধারায় আলাদাভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। তাঁকে আবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হবে।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরের দিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।
ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম হত্যার ঘটনায় ১১ মে একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। এই মামলার বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি আলোচিত এই মামলায় চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ ২৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত।