‘আমার মাইয়া নাই রে’ বলেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মুরশিদা

মেয়ের লাশের পাশে আহাজারি করছেন মুরশিদা খাতুন। আজ সোমবার গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের গাড়ারণ গ্রামে
ছবি: সাদিক মৃধা

সড়কের পাশে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে সুমাইয়া আক্তারের লাশ। পাশেই অচেতন হয়ে মাটিতে শুয়ে আছেন মা মুরশিদা খাতুন। তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেবাশুশ্রূষা দিচ্ছেন স্বজনেরা। কিছুক্ষণের মধ্যে জ্ঞান ফেরে মুরশিদার। মেয়ের লাশের দিকে তাকিয়ে ‘আমার মাইয়া নাই রে’ বলে চিৎকার দিয়ে আবার মূর্ছা যান তিনি।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের গাড়ারণ গ্রামে গিয়ে দেখা গেল এই দৃশ্য। সুমাইয়া আক্তার (৮) দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। দ্রুতগতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চাপায় প্রাণ গেছে তার।

আজ বেলা ১১টার দিকে গাড়ারণ গ্রামে শ্রীপুর-বরমী আঞ্চলিক সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এক বান্ধবীর সঙ্গে রাস্তা পার হয়ে সুমাইয়া বাড়ি যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। দুর্ঘটনার পর অটোরিকশাচালককে আটক করেছে জনতা।

সুমাইয়া আক্তার গাড়ারণ গ্রামের আকরাম হোসেন-মুরশিদা খাতুন দম্পত্তির দ্বিতীয় সন্তান। সে একই গ্রামের গাড়ারণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। আটক অটোরিকশাচালক মো. আনোয়ার হোসেন বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর গ্রামের বাসিন্দা।

সুমাইয়ার চাচা আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আজ সুমাইয়া স্কুলে যায়নি। সে বান্ধবীর সঙ্গে সড়ক পেরিয়ে ঘুরতে গিয়েছিল। বাড়ি ফেরার সময় সড়ক পার হচ্ছিল তারা দুজন। এ সময় সুমাইয়া কিছুটা এগিয়ে গিয়ে সড়ক পার হওয়ার মুহূর্তে বরমী থেকে শ্রীপুরগামী একটি অটোরিকশা দ্রুতগতিতে তাকে আঘাত করে। এতে তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে যখম হয়। হাসপাতালে নেওয়া আগে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম নাসিম প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।