হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা অবস্থানের পর সরে গেছেন চা-শ্রমিকেরা। দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আজ রোববার বেলা ১১টায় মাধবপুরের জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর এলাকার মহাসড়ক অবরোধ করেন হবিগঞ্জের ২৩টি চা-বাগানের শ্রমিকেরা।
মহাসড়ক অবরোধ করে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন শ্রমিকেরা। যান চলাচল বন্ধ থাকায় মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। বিকেল সাড়ে চারটার পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকেরা। ধর্মঘটের অষ্টম দিনে গতকাল শনিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে শ্রম অধিদপ্তর ও সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন চা-শ্রমিকনেতারা। বৈঠক শেষে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল ২৫ টাকা বাড়িয়ে মজুরি ১৪৫ টাকা করায় ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন সাধারণ শ্রমিকেরা। পরবর্তী সময়ে শ্রমিকনেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। আজকের অবরোধে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন চা-শ্রমিকনেতা খোকন দাশ, সাধন সাঁওতাল, রবীন্দ্র দাস প্রমুখ। তাঁরা বলেন, দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী চা-শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি। মজুরি ৩০০ টাকা না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না।
মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মঈনুল ইসলাম, মাধবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসিন আল মুরাদসহ প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা শ্রমিকদের মহাসড়ক ছেড়ে আলোচনায় বসতে অনুরোধ জানান। তবে শ্রমিকেরা নিজেদের দাবির বিষয়ে অনড় ছিলেন। পরে ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিকেল সাড়ে চারটায় প্রশাসনের অনুরোধে শ্রমিকেরা মহাসড়ক থেকে সরে যান।
চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, ২৩ আগস্ট সরকার ও মালিকপক্ষের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক আছে। ওই বৈঠকে কোনো সুরাহা না হলে ২৪ আগস্ট আবার তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করবেন।