সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবি বাস্তবায়নে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত একটি সভা হয়েছে। বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার নেতারা মতামত তুলে ধরলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ২৩ সেপ্টেম্বর এই পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
ওই সভা সূত্রে জানা গেছে, সভায় দক্ষিণাঞ্চলে ৮০ কিলোমিটার রোডমার্চ কর্মসূচি পালনের ব্যাপারে নেতারা মতামত দেন। এতে বরিশাল-পটুয়াখালীর সীমান্তবর্তী পায়রা সেতুর লেবুখালী থেকে এই রোডমার্চ শুরুর ব্যাপারে মতামত দেওয়া হয়।
গতকাল বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বরিশালে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বিভাগের ছয় জেলার নেতাদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করে পদযাত্রার প্রাথমিক রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেন। এতে বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর জেলা এবং বিভাগের ৪২টি উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক হারুন অর রশিদ। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান সভাটি সঞ্চালনা করেন।
সভায় সেলিমা রহমান বলেন, ‘ব্যর্থ আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে আরেকবার ক্ষমতায় আসতে চাইছে। খালেদা জিয়াকে তারা বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলার চক্রান্ত করছে। এর বিরুদ্ধে জনগণকে জাগিয়ে তুলতে বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হিসেবে এই রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করবে।’
দলীয় সূত্র জানায়, সভায় প্রাথমিকভাবে রোডমার্চের একটি রোডম্যাপ করা হয়েছে। এতে ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় বরিশাল ও পটুয়াখালীর সীমান্তবর্তী পায়রা সেতুর (লেবুখালী) উত্তর প্রান্ত (শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্টের সামনে) থেকে রোডমার্চ শুরু হতে পারে। এরপর ২৫ কিলোমিটার অতিক্রম করে নেতা-কর্মীরা বরিশাল নগরের রুপাতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় পৌঁছাবেন। সেখান থেকে ঝালকাঠি হয়ে রোডমার্চটি পিরোজপুর শহরে যাবে। পথে একাধিক পথসভায় বক্তব্য দেবেন রোডমার্চে অংশগ্রহণকারী নেতারা। তবে রোডমার্চের এই রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা হয়নি। আজ বুধবার পুনরায় সভা করে তা চূড়ান্ত করা হবে।
দলীয় সূত্র জানায়, রোডমার্চ কর্মসূচিতে দলটির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীকে সম্পৃক্ত করতে বিভাগের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এখনো রোডমার্চের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করিনি। মঙ্গলবার (গতকাল) রাতের সভায় আগত নেতারা নানা মতামত দিয়েছেন। আমরা সেগুলোর ভিত্তিতে এটা চূড়ান্ত করব। বুধবার (আজ) আবার আমরা বসব।’
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে বলা হয়, ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত রোডমার্চ ও সমাবেশের মতো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে দলটি। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে রোডমার্চ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।