কুড়িগ্রামে উজান থেকে আসা ঢল ও বৃষ্টি কম হওয়ায় জেলার সব নদ-নদীর পানি কমলেও প্লাবিত চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। গবাদিপশুর খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। কৃষিজমির ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাডোবা চরের বাসিন্দা হজরত আলী বলেন, দক্ষিণ বালাডোবা গ্রামের প্রায় ২০টি বাড়িতে এখনো পানি। ব্রহ্মপুত্র নদের পানিতে গোচারণভূমি সব পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গরুকে খাওয়ানোর ঘাস নেই। খড় কেনার টাকা নেই। গরু-বাছুর নিয়ে কষ্টের মধ্যে আছেন।
আজ বুধবার সকাল ৯টায় কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে কমে বিপৎসীমা বরাবর অবস্থান করছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার, ধরলার সদর পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৭৩ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের নামা চর, মধ্যপাড়া এলাকায় এবং বুধবার সকালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের প্রথম আলো চর, রসূলপুর ঘুরে দেখা যায়, এখনো দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় আছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, উজানের ভারী বৃষ্টি কমে আসার কারণে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিস্তার পানিও কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে।
কুড়িগ্রামের প্রথম আলো চরের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি এখনো বন্যার পানিতে ডুবে আছে। চরের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে দু-চারটি গবাদিপশু আছে। নিম্নভূমি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় তাঁরা গবাদিপশুর খাদ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ৪৮৫ হেক্টর রোপা আমন ও ৫০ হেক্টর সবজিখেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত ঠিক কত হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে,সে হিসাব পাওয়া যায়নি। মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা খোঁজখবর নিয়ে ক্ষতির পরিমাণ তালিকা করছেন।