ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে এবারও আলোচনায় এসেছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মঈন উদ্দিন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আসনটির উপনির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা অরবিন্দ বিশ্বাসের দপ্তরে তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়।
মঈন উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি। তিনি আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর পশ্চিম ইউনিয়নের মৈশান গ্রামের বাসিন্দা।
মঈন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, জননেত্রী প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরো দেশ এগিয়ে গেছে। কিন্তু সঠিক নেতৃত্বের অভাবে অসহায়-অবহেলিত সরাইল-আশুগঞ্জের মানুষের তেমন উন্নয়ন হয়নি। এলাকাকে এগিয়ে নিতে তিনি লোকজনের চাপে গত নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। গত নির্বাচনে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও দলীয় কিছু লোকের বিরোধিতার কারণে চূড়ান্ত বিজয় পাননি। এবারও যেহেতু আসনটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে, এ জন্য তিনি এবারও লোকজনের চাপে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি অবহেলিত এ আসনের মানুষের সেবা করতে চান। জনগণ তাঁর সঙ্গে আগেও ছিল, এবারও আছে।
সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মঈন উদ্দিনের সঙ্গে রয়েছেন। এখানে তাঁর বেশ পরিচিতি রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে আসছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। দুটি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩১৯ জন। এর মধ্যে সরাইল উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯ এবং আশুগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১ লাখ ৩২ হাজার ২৪০ জন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকা বা মহাজোটের কোনো প্রার্থী ছিলেন না। ওই নির্বাচনে মঈন উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে যে পরিমাণ ভোট পেয়েছেন, এর আগে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী এত ভোট পাননি।
স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, দলীয় কিছু লোকের বিরোধিতার কারণে মঈন উদ্দিন সামান্য ভোটের ব্যবধানে গত নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। এরপর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি বেশ আলোচনায় আছেন। গেল নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ৮৩ হাজার ৯৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মঈন উদ্দিন পেয়েছিলেন ৭৫ হাজার ৪১৯ ভোট। গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রিফাত সিকদার বলেন, ‘গত নির্বাচনে বিএনপির প্রবীণ প্রার্থীর সঙ্গে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম হয়েছেন মঈন উদ্দিন। তাই এবার আমরা আশুগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন থেকে ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাঁর সঙ্গে রয়েছি।’
আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের বলেন, গত নির্বাচনে আসনটি উন্মুক্ত থাকায় আশুগঞ্জ ও সরাইল উপজেলার লোকজন মঈন উদ্দিনে জোর করে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছিলেন। তিনি সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। এবারও আসনটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, এবার তিনিই যোগ্য প্রার্থী। আমরা তাঁর পক্ষেই কাজ করব। আগামী ৮ তারিখে আশুগঞ্জ উপজেলায় দলীয় সভা করে তাঁর পক্ষে কাজ করার জন্য একটি ঘোষণা দিতে পারি।’