ফরিদপুরে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

রায়ের পর আসামি সরোয়ার শেখকে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে ফরিদপুর আদালতে
ছবি: প্রথম আলোকে

ফরিদপুরে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী সরোয়ার শেখকে (৩০) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রদীপ রায় এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় সরোয়ার শেখ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

একই সঙ্গে সরোয়ার শেখকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা তাঁকে অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি স্বপন পাল রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী যদি একসঙ্গে থাকেন এবং এ অবস্থায় যদি স্বামী বা স্ত্রীর কারও মৃত্যু হয়, এ ক্ষেত্রে যিনি বেঁচে থাকেন তাঁর ওপর নির্ভর করে মৃত্যুর কারণ নির্দিষ্টভাবে জানানো। ফরিদা বেগম গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, এ কথা স্বামী সরোয়ার বললেও আদালতে তা প্রমাণিত হয়নি।’

সরোয়ার শেখ ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের চুন্নু শেখের ছেলে। ২০১৬ সালে একই উপজেলার চর বাগাট গ্রামের রাশেদ শেখের মেয়ে ফরিদা বেগমের (১৯) সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের ৯ মাস পর ২০১৭ সালের ৬ জুলাই সরোয়ারের বাড়ি থেকে গলায় শাড়ি প্যাঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় ফরিদার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় মধুখালী থানায় প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা যায়, ফরিদাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ওই বছরের ১৯ আগস্ট ফরিদার মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে সরোয়ার, তাঁর মা সাহেরা বেগম (৫৫) এবং দুই মামা ওবায়দুর রহমান (৪৫) ও অলিযার রহমান (৬০) আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, স্বামী সরোয়ার ৪০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী ফরিদা বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের সময় ফরিদা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০১৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সরোয়ারসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মধুখালী থানার উপপরিদর্শক মোস্তফা কামাল।

রায়ে সরোয়ারের মা, তাঁর দুই মামাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। সরকারি কৌঁসুলি স্বপন পাল বলেন, আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে। এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। এ রায়ে সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।