ঘূর্ণিঝড় হামুন

ভোলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে হালকা বাতাস, প্রশাসনের প্রস্তুতি সভা

ভোলা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি প্রস্তুতি সভা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে
ছবি: প্রথম আলো

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘হামুনের’ প্রভাবে ভোলায় গতকাল সোমবার দিবাগত রাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। হালকা বাতাস বইছে। এমন অবস্থায় ভোলা-বরিশাল, ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও ভোলা-ঢাকা নৌপথের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় বসেছে জেলা প্রশাসন।

প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলেছে, উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ ভোলা ও তার অদূরবর্তী দ্বীপ-চরগুলো ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

আগামীকাল বুধবার দুপুর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর আগে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জরুরি ভিত্তিতে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা ডেকেছে ভোলার জেলা প্রশাসন। জেলার সব সরকারি-বেসরকারি বিভাগের প্রধানদের ও প্রতিনিধিদের দুর্যোগ চলাকালীন নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থানের অনুরোধ করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আরিফুজ্জামান।

প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, ভোলায় ৭৪৩টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ৬৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। বাকিগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জেলার সব কটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত খাবার, পানি, আলো, শিশুখাদ্য, ওষুধ, স্যালাইন, শৌচাগার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বসবাস করছে, তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনার প্রস্তুতি চলছে।

প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন সতর্কীকরণ বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক। একই সঙ্গে সাগরে এবং নদীতে থাকা নৌযানগুলোকে নিরাপদে আনা হচ্ছে। যারা সংকেতের বাইরে আছে, তাদের কাছেও খবর পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান ডিসি।

মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ভোলায় ২২ লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে প্রায় ৩ লাখ মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চলে বসবাস করছে। তাদের মধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ নিরাপদে আনার ব্যবস্থা করতে পর্যাপ্ত ট্রলারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শিশুখাদ্য ও গোখাদ্যের ঘাটতি থাকায় মন্ত্রণালয়ে শিশুখাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা ও গোখাদ্যের জন্য ৫ লাখ টাকার চাহিদা পাঠানো হয়েছে। সবাই মিলে সমন্বিতভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।