কক্সবাজার

ট্রলার থেকে ১০ জেলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার, হাত-পা বাঁধা ছিল ৬ জনের

উপকূলে টেনে আনা ট্রলার থেকে লাশ উদ্ধারের অভিযান চলছে। আজ রোববার দুপুরে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে
ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে টেনে আনা ডুবন্ত একটি ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আজ রোববার বেলা দুইটা থেকে অভিযান শুরু হয়। বেলা তিনটা পর্যন্ত ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ডুবন্ত ট্রলারে আরও লাশ থাকতে পারে জানিয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার হওয়া লাশগুলোর সব কটি বিকৃত হয়ে গেছে। এর মধ্যে ছয়জনের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। লাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কমপক্ষে ১৫ দিন আগে গভীর সমুদ্রে জলদস্যুরা ট্রলারটির মাছ–জাল লুট করে জেলেদের হাত–পা বেঁধে কুটিরে (ট্রলারে মাছ ও বরফ সংরক্ষণের কক্ষ) আটকে রেখে ট্রলারটি সাগরে ডুবিয়ে দিতে পারে। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, গভীর সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারটি আরেকটি মাছ ধরার ট্রলারে আটকে পড়েছিল। ওই ট্রলারের জেলেরা রশি দিয়ে ডুবন্ত ট্রলারটি টেনে মহেশখালীর সোনাদিয়া চ্যানেলে নিয়ে আসেন। আজ বেলা দেড়টার দিকে ডুবন্ত ট্রলারটি কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক (বিমানবন্দরের পশ্চিমে) চ্যানেলে পৌঁছালে মৃত ব্যক্তির হাত-পা ভেসে উঠতে দেখা যায়। তাতে ভয় পেয়ে টেনে আনা ট্রলারের জেলেরা সটকে পড়েন। স্থানীয় লোকজন লাশবোঝাই ট্রলার ভেসে আসার খবর জানালে বেলা দুইটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাঁরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন।

উদ্ধারকাজে নিয়োজিত পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, লাশের অবস্থা (হাত-পা বাঁধা) দেখে মনে হচ্ছে, ঘটনাটি জলদস্যুরা ঘটিয়েছে। ট্রলার ও নিহত জেলেরা কক্সবাজারের বাইরের জেলার হতে পারে। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।

স্থানীয় নুনিয়াছটার ট্রলারমালিক গিয়াস উদ্দিন জানান, এ ধরনের একটি ট্রলারে কমপক্ষে ২০ জন জেলে থাকেন। ট্রলারের কুটির থেকে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করলেও ভেতরে আরও লাশ আটকে থাকতে পারে। ট্রলারটির অর্ধেক অংশ এখনো পানির নিচে ডুবে আছে। সেখানে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালানোও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, উদ্ধার তৎপরতা শেষ হলে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ডুবে যাওয়া ট্রলার ও নিহত জেলেদের পরিচয় শনাক্ত করার কাজ চলছে।