নাটোরে জনসমাবেশ শুরুর চার ঘণ্টা আগে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার ভোর পাঁচটার দিকে শহরের চকবৈদ্যনাথ গুড়পট্টি এলাকায় তাঁকে লাঠি ও রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা।
জনসমাবেশের প্রস্তুতির জন্য দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগের লোকজন রহিম নেওয়াজের ওপর এই হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপির দলীয় কোন্দল থেকে এই হামলা হতে পারে। এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের কর্মীদের লাঠিসোঁটা হাতে শহরে দফায় দফায় মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে।
গুরুতর আহত অবস্থায় বিএনপির নেতা রহিম নেওয়াজকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর পূর্বনির্ধারিত জনসমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি আজ সকাল ৯টায় শহরের আলাইপুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জনসমাবেশ করার উদ্যোগ নেয়। এ উপলক্ষে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ ভোর পাঁচটার দিকে তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার ছাতনী গ্রাম থেকে মোটরসাইকেলে দলীয় কার্যালয়ে আসছিলেন। তিনি চকবৈদ্যনাথ গুড়পট্টি এলাকায় পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁর ওপর হামলা করে। তাঁকে লাঠি ও রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। তিনি অচেতন হয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
সদস্যসচিবকে পেটানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির নেতা–কর্মীরা জেলা বিএনপির কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেন। তাঁদের বাইরে বের হতে দেখা যায়নি, তবে কার্যালয়ের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। এদিকে আওয়ামী লীগের ১৫ থেকে ২০ জন কর্মীকে লাঠিসোঁটা হাতে বিএনপির কার্যালয়ের সামনের রাস্তা দিয়ে দফায় দফায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়।
জেলা বিএনপির সদস্য ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, হত্যার পরিকল্পনা করেই রহিম নেওয়াজের ওপর হামলা করা হয়েছে। তিনি জনসমাবেশ সফল করার জন্য ভোরেই বাড়ি থেকে দলীয় কার্যালয়ে আসছিলেন। তাঁর গতিপথ দুর্বৃত্তদের জানা ছিল। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এখন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তাঁরা আপাতত জনসমাবেশের কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ওরফে রমজান বিএনপির অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো নেতা–কর্মী ঘটনাস্থলে ছিলেন না। পূর্ববিরোধের জেরে বিএনপির কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ শহরে উত্তেজনা সৃষ্টি করলে তাঁরা তা প্রতিহত করবেন।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছিম আহম্মেদ জানান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিবকে পেটানোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। হামলাকারী ব্যক্তিদের কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে হামলাকারী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।