সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন একদল সাধারণ শিক্ষার্থী। গতকাল বৃহস্পতিবার শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী নিজেদের ফেসবুকে সমন্বয়ক কমিটিকে ‘ফ্যাসিস্ট ও স্বার্থান্বেষী’ উল্লেখ করে তাঁদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা দেন।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতিমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আশরাফুজ্জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত বুধবার অনুষ্ঠিত ডিন কাউন্সিলের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে সব রাজনৈতিক সংগঠন এবং কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন ও কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে কয়েক দিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণা, উপাচার্যের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডিন কাউন্সিলের জরুরি সভা থেকে রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আট সদস্যবিশিষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তখন থেকেই এ কমিটিকে ‘স্বঘোষিত’ বলে অভিহিত করেছেন। এ কমিটির সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলেও তখন শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের চতুর্থ বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সমন্বয়কের কার্যক্রম দেখা যায়নি। এখন ব্যক্তি ও রাজনৈতিক স্বার্থ বাস্তবায়নে ওই কমিটি তৎপর হয়েছে। এ অবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই স্বঘোষিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক হিসেবে থাকা আজিজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে যেন আবার আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য চালু হয়, এ জন্য ছাত্রলীগের ইশারায় কিছু ছাত্র কমিটিকে বিতর্কিত করতেই অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছেন। কারও কথায় প্ররোচিত হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেন এমনটা না করেন, এ অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। আপাতত কিছু কাজে ব্যস্ত আছি, তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’