নাটোরের বড়াইগ্রামে পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত এক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম আশিক সরকার (২৬)। রোববার বিকেল চারটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাফিউল আযম খান বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, আশিক সরকার উপজেলার চান্দাই গ্রামের মীরন সরকারের ছেলে। তিনি চান্দাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। আশিকের সাংগঠনিক পরিচয় নিশ্চিত করেন বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা শাহাবুল ইসলাম।
থানা–পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, চান্দাই গ্রামে ২ দশমিক ৫১ একর জলকরের একটি খাস পুকুর উপজেলার পারকোল দক্ষিণপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে ইজারা নিয়েছিলেন ওই সংগঠনের সভাপতি মসলেম উদ্দিন। প্রতিবেশী সাহেব আলীসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে ওই পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেছিলেন। ১৫ জুন রাতে নিহত আশিকের বাবা মীরন সরকার ও স্থানীয় হাফিজুর রহমান অনুগত ব্যক্তিদের নিয়ে ওই পুকুরের মাছ জোরপূর্বক ধরে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ নিয়ে শনিবার এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের সমর্থকেরা সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়লে হাফিজুর রহমান ও আশিক সরকার আহত হন। তাঁদের দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তাঁর মৃত্যু হয়। হাফিজুরের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
সংঘর্ষ ও ছেলে আহত হওয়ার ঘটনায় ১৬ জুন বড়াইগ্রাম থানায় হত্যাচেষ্টার একটি মামলা করেন ছাত্রলীগ নেতা আশিকের বাবা মীরন সরকার। এ মামলায় প্রতিপক্ষ সাহেব আলী (৫৪), ইয়াহিয়া (৪৫), জাহিদুল প্রামাণিক (৪৫), নায়েব প্রামাণিক (৫৬), শাকিব হোসেন (২২), সুইট হোসেন (২৩), কামরুল ইসলাম (৪০), আবদুস সোবাহান (৫৯), আবদুস সোহরাব (৬০), দুলাল হোসেনসহ (৪২) অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলায় জাহিদুল ইসলাম কারাগারে থাকলেও অন্যরা জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
নিহত ছাত্রলীগ নেতা আশিকের বাবা মীরন সরকার ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেছেন। বড়াইগ্রাম থানার ওসি জানান, হত্যাচেষ্টার মামলাটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।