পাগলা মসজিদের ৮ সিন্দুকে এবার মিলল ১৯ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের সিন্দুকে পাওয়া টাকা গণনা করছেন দুই শতাধিক লোক
ছবি: তাফসিলুল আজিজ

চার মাসের মাথায় আবারও কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের আটটি দানসিন্দুক খুলে মিলেছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। আজ শনিবার সকাল আটটায় সিন্দুকগুলো খুলে ১৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। এখন চলছে গণনা।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ৮টি সিন্দুকে ১৬ বস্তা টাকা দিনভর গুনে হয়েছিল ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। এ ছাড়া পাওয়া গিয়েছিল বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।

জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে লোহার আটটি দানসিন্দুক আছে। তিন মাস পরপর এসব সিন্দুক খোলার নিয়ম থাকলেও এবার খোলা হয়েছে চার মাসের মাথায়। পবিত্র রমজান আর ঈদের কারণে এই সময় লেগেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানসিন্দুক খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজ এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আজ সকাল আটটায় সিন্দুকগুলো খোলা হয়। প্রথমে টাকাগুলো সিন্দুক থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মেঝেতে ঢালা হয়। এখন চলছে গণনার কাজ। গণনা শেষে টাকার পরিমাণ বলা যাবে।

প্রথমে টাকাগুলো সিন্দুক থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মেঝেতে ঢালা হয়

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলাম, শেখ জাবের আহমেদ ও সাদিয়া আফরিন, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।


প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এখন চলছে টাকা গণনার কাজ। মাদ্রাসার শতাধিক খুদে শিক্ষার্থী, ব্যাংকের অর্ধশত স্টাফ এবং মসজিদ কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মিলে দুই শতাধিক লোক টাকা গণনা করছেন।

দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এসে পাগলা মসজিদে দান করে থাকেন

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি গড়ে ওঠে। কথিত আছে, খাসনিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করে থাকেন। মানুষ টাকাপয়সা ছাড়াও স্বর্ণালংকার দান করেন। এ ছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসও মসজিদটিতে দান করা হয়।

মানুষ টাকাপয়সা ছাড়াও স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা দান করেন পাগলা মসজিদে

মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তাও করা হয়। এ ছাড়া মসজিদের জমানো টাকা দিয়ে এখানে মসজিদ-মাদ্রাসাসহ অর্ধলক্ষ মুসল্লি যাতে একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন, এ রকম আকর্ষণীয় একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১২০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে।