ভোলায় বালুমহালের ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন। আজ শুক্রবার সদর উপজেলার চর কাচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ব্যারাকের সামনে মেঘনার তীরে
ভোলায় বালুমহালের ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন। আজ শুক্রবার সদর উপজেলার চর কাচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ব্যারাকের সামনে মেঘনার তীরে

ভোলায় মেঘনা নদীর বালুমহালের ইজারা বাতিলের দাবি

ভোলায় মেঘনা নদীর বালু মহলের ইজারা বাতিল ও বালু তোলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ শুক্রবার সদর উপজেলার চর কাচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ব্যারাকের সামনে মেঘনার তীরে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

নদীভাঙনের শিকার সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়ন ও দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা কর্মসূচিতে অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, স্থানীয় কৃষক নেতা শাহাবুদ্দিন ফরাজি, কৃষক মঞ্জুর আলম মিঞাজি, নাগর লক্ষ্মণ, জাহাঙ্গীর আলম, আইজুদ্দিন আসকর, নুরুল ইসলাম খান প্রমুখ।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন বলেন, নদীভাঙনের শিকার হয়ে তাঁরা বসতবাড়ি হারিয়ে কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চরের খরকি, বারাইপুর, রামদেবপুর,  মদনপুরের চরপদ্মা, চর টবগী, বৈরাগীর চর, মধুপুর, মদনপুর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। মদনপুর ও কাচিয়া অংশে প্রায় ৫ হাজার পরিবারের বসবাস। মাঝের চরের প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ করেন তাঁরা। সারা বছর কয়েক হাজার গবাদিপশু পালন হয় এই চরে। কিন্তু এ চর ঘেঁষে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে মানুষ। গত দুই বছরে চরের উত্তর–পূর্ব দিকের প্রায় ২০০ হেক্টর জমি ভেঙে গেছে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভাঙনের কারণে তাঁরা দিশাহারা। মূল ভূখণ্ডে তাঁদের কোনো ভিটেমাটি নেই। চরে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানেও ভাঙন শুরু হয়েছে। এর মূল কারণ নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন। ১৫ বছর ধরে মেঘনায় ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা হয়েছে। প্রথম ১২-১৩ বছর আড়ালে–আবডালে বালু তোলা হতো। পরে বালুমহাল হিসেবে সরকার ইজারা দিয়েছে। যথেচ্ছ পরিমাণে বালু তোলায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। বালু তোলা বন্ধে তাঁরা সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠার হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

২০ বছর ধরে মাঝের চরে সবজির আবাদ করছেন শাহাবুদ্দিন ফরাজি। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে ভারত থেকে আসা পানির ঢলে নদী এখন বেশি ভাঙছে। এর মূল কারণ নদী থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। সরকা‌রের কাছে তাঁদের অনু‌রোধ, ‘আমাদের বাঁচান, মাঝের চরকে বাঁচান।’

মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইউনুস পাটওয়ারী বলেন, ভাঙনে বাবা-দাদার কবর বিলীন হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে মাঝের আশ্রয় নিয়েছে মানুষ। প্রতিদিন ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। অবিলম্বে এটা বন্ধ না করলে চরবাসীর মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকবে না।