অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, ‘কৃষি বিভাগ থেকে বলা হয়, খাদ্য উৎপাদনে কিছু ঘাটতি হতে পারে। এ জন্য আমরা খাদ্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রাথমিকভাবে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্যশস্য কেনার পরিকল্পনা নিয়েছি। এর মধ্যে মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন চাল আমদানি করা হবে। আলোচনায় আছে, ভিয়েতনাম থেকেও চাল আমদানি করার। এ ছাড়া ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সরকার সরাসরি ওই সব দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে চাল আমদানি করবে।’
আজ রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর তীরে নির্মাণাধীন স্টিল সাইলো পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খাদ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন। আলী ইমাম মজুমদার বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চাল সংগ্রহে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ২২ লাখ টন খাদ্য মজুত আছে। সেটি ৩০ লাখ টন করার জন্য কাজ করছে সরকার।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভারত থেকে চাল আমদানি প্রসঙ্গে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বাণিজ্যকে রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে ফেলি না। ভারত থেকে চাল কিনলে তুলনামূলকভাবে খরচ কম পড়বে। এ জন্য দেড় লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া আছে। আমরা আশা করি, সে চাল দ্রুত আসবে।’
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘আমরা একক কোনো একটা দেশের ওপর নির্ভর করব না। যেহেতু আমাদের খাদ্যঘাটতি আছে, আমরা অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করে সে ঘাটতি পূরণ করব। আমরা সে চেষ্টা করছি। ভারতের থেকে চাল আমদানি বাণিজ্য ও রাজনীতিকে আমরা একসঙ্গে দেখছি না, বাণিজ্যকে আমরা বাণিজ্যিকভাবে দেখছি।’
দেশে ৭০ লাখ টন গমের চাহিদা আছে উল্লেখ করে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা উৎপাদন করতে পারি মাত্র ১০ লাখ টন গম। এর বেশি উৎপাদন আমাদের পক্ষে কঠিন হচ্ছে। গম চাষের জমিতে এখন ভুট্টা চাষ হচ্ছে। অধিকাংশ গম বাহির থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। বেসরকারি খাত আমদানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
এ সময় খাদ্য উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর পাড়ে ৫৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্টিল রাইস সাইলো নির্মাণ করা হচ্ছে। আধুনিক এই সাইলোয় পুষ্টিগুণ অটুট রেখে অন্তত দুই বছর চাল সংরক্ষণ করা যাবে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি খাদ্যশস্য সংরক্ষণাগার হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।